কুয়াকাটায় রাতের আধারে জমি দখল, আতংকিত বিনিয়োগকারীরা Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




কুয়াকাটায় রাতের আধারে জমি দখল, আতংকিত বিনিয়োগকারীরা

কুয়াকাটায় রাতের আধারে জমি দখল, আতংকিত বিনিয়োগকারীরা




কলাপাড়া প্রতিনিধি: পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় জমি দখলের হিরিক পরেছে। এক রাতে ৩টি আবাসিক হোটেলের সামনে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে। আবাসিক হোটেল ক্যাসেল ড্রিম ও ডেসটিনি গ্রুপের ভবনের সামনে দুটি ঘর তোলা হয়েছে। শুক্রবার রাত তিনটার দিকে প্রভাবশালী একটি গ্রুপ এ দখল প্রক্রিয়া চালায়। গভীর রাতে ২৫-৩০ জন মানুষ নিয়ে দখল প্রক্রিয়া চালানোর সময় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরে। ৯৯৯ এ খবর পেয়ে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ততক্ষণে ঘর উত্তোলন ও সাইনবোর্ড টানানোর কাজ সম্পন্ন করে দখলদাররা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আবাসিক হোটেল ক্যাসেল ড্রিম, ডেসটিনি গ্রুপের একটি টিন সেড আবাসিক ভবন এবং বেঙ্গল গেস্ট হাউসের সামনে গাছের সাথে তিনটি সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছে দখলদাররা। সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে এই জমির মালিক মোঃ আসলাম হাওলাদার, মোঃ মনির হোসেন, কাজী হারুনর রশিদ,মোঃ সেলিম রেজা, নেয়ামুল সিদ্দিকী (সনেট), মোঃ ইয়ার হোসেন এই ছয় জনের নাম লেখা রয়েছে। এর পাশাপাশি আরো একটি সাইনবোর্ড দেখা গেছে। সেখানে লেখা রয়েছে প্রস্তাবিত হোটেল সী টাচ। কিভাবে তারা এই জমির মালিক হয়েছে, রাতের আধারে কেনই বা জমি দখল করা হয়েছে তা কেউ জানেন না।

স্থানীয় এবং ভূমি প্রশাসন সুত্রে জানাগেছে, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পশ্চিমে প্রায় ৫ একর জমি নিয়ে সরকারের সাথে মালেক ফরাজী গংদের দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলমান রয়েছে। এ মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ মামলায় এখনো কোন পক্ষই অদ্যবতি ফয়সালায় যেতে পারেনি। বিএস জরিপে এসব জমি সরকারের নামে রেকর্ড হয়েছে। এসব জমি বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে অনেক আগেই। ওইসব বিনিয়োগকারীরা বিরোধীয় জমিতে অন্তত ১০ টি পাকা স্থাপনা করেছে। হঠাৎ করে এসব স্থাপনার সামনে রাতের আধারে প্রভাবশালী সুবিধাভোগী লোকদের সহযোগিতায় মালিকানা দাবীতে সাইনবোর্ড ও ঘর তোলায় হতবাগ হয়েছেন এসব বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবী সরকারের সাথে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ভুয়া মালিকানা দাবীতে এসব জমি দখল করা হয়েছে। যার কারণে তাদের বিনিয়োগ নিয়ে দূঃসচিন্তায় পরেছেন।
স্থানীয়দের সুত্রে জানাগেছে, গত এক বছরে একাধিক জমি এভাবে দখল হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের জমির সামনে থাকা পাউবোর অধিগ্রহণকৃত জমিতে জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় ঘর তুলে দখলে নিয়েছে স্থানীয় অনেক মানুষ। এখন তাদের জমি এবং সম্পদ মুল্যহীন হয়ে পরেছে। এতে শংকিত হয়ে পরেছেন কুয়াকাটায় বিনিয়োগকারীরা।

হোটেল ক্যাসেল ড্রীমের কেয়ার টেকার আলমগীর চৌকিদার জানান, রাত আড়াইটার দিকে ২৫-৩০ জনের একটি দল ট্রলি গাড়ীতে করে টিনের ঘর নিয়ে এসে তাদের হোটেলের সামনে বসিয়ে দেয় এবং মালিকানা দাবীর সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়। তিনি ভয়ে হোটেলের গেট বন্ধ করে আত্মরক্ষা করে। আলমগীর জানান, দখলকারীরা বরিশাল এবং উপজেলা শহরের লোক। এদের কাউকেই তিনি চিনেন না। বেঙ্গল গেস্ট হাউসের মালিক নাসরিন আজম জানান, রাত তিনটার দিকে হোটেল থেকে তাকে ফোনে জানায় তার হোটেলের সামনে কে বা কাহারা তাদের জমি দাবী করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। তাৎক্ষনিক প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মালিকানা দাবীতে দেয়া সাইনবোর্ডে থাকা নাম্বারে ফোন দিলে কাজী হারুনর রশিদ জানান, তারা লাল মিয়া তালুকদারের কাছ থেকে এই জমি ক্রয় করেছেন। তার ভিত্তিতে তারা সাইনবোর্ড এবং ঘর তুলেছেন। সরকারের নামে রেকর্ড হওয়া বিএস জরিপ ভাংতে আদালতে মামলা করেছেন।

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, মালিকানা দাবীতে বেআইনিভাবে রাতের আধারে এভাবে দখল হলে বিনিয়োগকারীরা কুয়াকাটায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এমন দখল বন্ধে প্রশাসনের দৃস্টি দেয়া উচিত বলে মনে করেন এই হোটেল মালিক।

মহিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ ফেরদৌস আলম জানান, ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট বলেন, তিনি জমি দখলের কথা শুনেছেন। পরিদর্শন শেষে আইনানুযায়ী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কথা হয় কুয়াকাটা পৌর মেয়রের সাথে। তিনি জানান, ফেইসবুকে দেখে আমি এসিল্যান্ড এবং ইউএনও কে জানিয়েছি। তারা এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD