পদ্মা সেতুর মাধ্যমে প্রমাণ হলো বাংলাদেশ পারে:শেখ হাসিনা Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




পদ্মা সেতুর মাধ্যমে প্রমাণ হলো বাংলাদেশ পারে:শেখ হাসিনা

পদ্মা সেতুর মাধ্যমে প্রমাণ হলো বাংলাদেশ পারে:শেখ হাসিনা

পদ্মা সেতুর মাধ্যমে প্রমাণ হলো বাংলাদেশ পারে:শেখ হাসিনা




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধা দিয়েছিল, তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে প্রমাণ হলো বাংলাদেশ পারে। সেই সঙ্গে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যে কোনও ত্যাগ স্বীকারের ওয়াদা করেন তিনি। পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র ও কটাক্ষ করেছে তাদেরও এ সেতু পাড়ি দেয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

 

 

সরকার প্রধান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সমর্থন দিয়েছেন বলেই জনগণের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আজ পদ্মা সেতু নির্মাণে সমর্থ হয়েছেন।

 

 

শনিবার দুপুরে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসমুদ্রে সভাপতির ভাষণে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

 

 

যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ গাড়িতে করে সেতু পার হয়ে জাজিরা প্রান্তের শিবচরে জনসভা স্থলে বাসার সঙ্গে সঙ্গে পূরণ হয়ে যায় দেশের মানুষের আজন্ম লালিত এক স্বপ্ন।

 

 

প্রমত্ত পদ্মা নদীর উপর সেতু হবে, এটা কয়েক বছর আগেই ছিলো এক স্বপ্নের নাম। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ হলো জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যার হাত ধরেই।

 

 

লাখো কোটি মানুষের পদ্মা সেতুর অকাঙ্খা পূর্ণ হলো। সেই সঙ্গে জনসভা স্থলের ১০ লাখ মানুষের শেখ হাসিনাকে একনজর দেখার অপেক্ষাও যেন শেষ হলো।

 

 

উদ্বোধনী দিনে খেয়ালী পদ্মার আকাশও এই রোদ এই বৃষ্টির খেলায় মেতে উঠেছিলো। সাহস ও শক্তির পরীক্ষায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা উত্তীর্ণ হয়েছেন।

 

 

আর জনগণও সাত ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার পরীক্ষায়ও পাস করেছেন। তারও সাক্ষী হয়ে থাকলেন ইতিহাসের এক মাহেন্দ্রক্ষণে। দেখলেন দক্ষিণের সঙ্গে স্বপ্নের সংযোগ।

 

 

এ সময় বিশাল জনসমুদ্রের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভপতি জানান, এই সেতু নির্মাণ করে বিরোধীদের কটাক্ষ ও ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছেন তিনি।

 

 

দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে তিনি জানান, এক সময় দেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের উক্তি ‘নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়’ বাংলাদেশ যে পারে সেটাই তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন।

 

 

তিনি বলেন, আজকে নিজেদের টাকায় কীভাবে পদ্মা সেতু করতে পারলাম কারণ, আজকে আপনারা বাংলাদেশের জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন পাশে দাঁড়িয়েছেন।

 

 

‘আওয়ামী লীগ কোনদিনও পদ্মা সেতু করতে পারবে না’ বিএনপির এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে হাসিনা বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে বলছি আসুন, দেখে যান পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে কি-না।

 

 

তিনি বলেন, প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাবেন। কারণ, আগামী প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করাই তাঁর সরকারের একমাত্র লক্ষ্য।

 

 

সরকার প্রধান বলেন, আরো উন্নত জীবন যেন আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা পায় তার ব্যবস্থাও আমি করবো। আজকে আপনাদের কাছে এটাই আমার ওয়াদা।

 

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশ আপনাদের, এই দেশ আমাদের। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন এবং এই দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।

 

 

তিনি বলেন, বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে পেয়েছি আপনাদের। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ।

 

 

আওয়ামী লীগ নেত্রী আর যোগ করেন, আপনাদের পাশেই আমি আছি, আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।

 

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ২০০১ সালে তিনি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও খালেদা জিয়া সরকারের এসে সেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। আবার ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে।

 

 

পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ড. ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ থেকে বয়সের কারণে চলে যেতে হল, তখন তিনি আমেরিকায় গিয়ে তদবির করে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলেন।

 

 

তিনি বলেন, সে সময় বলা হলো, দুর্নীতি হয়েছে, কিন্তু কে দুর্নীতি করেছে। যে সেতু আমাদের প্রাণের সেতু, যে সেতুর সঙ্গে আমার এই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত। এই সেতু নির্মাণে কেন দুর্নীতি হবে? তারা টাকা দেয়নি, কিন্তু দুর্নীতি-ষড়যন্ত্র বলে টাকা বন্ধ করল।

 

 

জাতীয় সংসদে তখন তাঁর ঘোষণা- বাংলাদেশ বসে থাকবে না, আমরা নিজের টাকায় এই পদ্মা সেতু তৈরি করবো’র উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে অনেক ভাবে বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা করেছে এবং তাদের ধারণা ছিল যে বাংলাদেশ নিজের টাকায় এই সেতু নির্মাণ করতে পারবে না।

 

 

কিন্তু জনগণের শক্তিতে আস্থা রাখার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, সেই শক্তির ওপর আস্থার কারণেই আজ প্রমত্ত পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সেতু। এর ফলে বদলে যাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক দৃশ্যপট, আসনে নতুন দিনে ডাক।

 

 

তিনি বলেন, আর যারা এই সেতু নির্মাণে বাধার সৃষ্টি করেছিল তাদেরকে এই পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে উপযুক্ত একটা জবাব আমরা দিতে পেরেছি- না, বাংলাদেশ পারে। আর বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই এবং ভবিষ্যতেও পারবে না।

 

 

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ দিন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে, ফলে সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে, কলকারখানা ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অন্তত ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন আমরা করতে পারবো।

 

 

আর কাউকে বর্ষাকালে খরস্রোতা পদ্মা আর পাড়ি দিতে হবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর কাউকে এই নদী পাড়ি দিতে গিয়ে বাবা, মা, ভাই-বোন, সন্তান বা আপনজনকে হারাতে হবে না, আপনারা সেখানে নির্বিঘ্নে চলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থাই আমরা করে দিয়েছি।

 

 

৭৫ সালে বাবা, মা, ভাইদের হারানোর পর ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হবার পর একরকম জোর করেই নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফিরে আসার কথা স্মরণ করে বলেন, নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে ফিরে এসেছিলেন এই বাংলাদেশে, সমগ্র বাংলাদেশ তখন ঘুরে বেড়িয়েছেন।

 

 

তিনি সে সময় শরিয়তপুরে আসার স্মৃতিচারণ করে বলেন, লঞ্চে করে আসার পর লঞ্চ নষ্ট হয়ে গেলে নৌকায় করে প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে বেড়িয়েছেন, কাদা-পানিতে নেমেছেন, মিটিং করেছেন, আজকে যে শরিয়তপুরের চেহারা পাল্টে গেছে। কারণ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ করেছে এবং সার্বিক উন্নয়ন করেছে।

 

 

 

সে সময় মাদারীপুরও সেই লঞ্চে যেতে হতো এবং গোপালগঞ্জ যেতে ঢাকা থেকে ২২ ঘণ্টা সময় লাগতো এবং এসব এলাকা অত্যন্ত দুর্গম ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট উন্নয়নসহ তাঁর সরকার শিকারপুর, দোয়ারিকা এবং গাবখান সেতু করে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি করেছে।

 

 

রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে কষ্ট করে জনসভাস্থলে আসার এবং দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকার জন্য লাখো মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কবির ভাষায় প্রধানমন্ত্রী বলেন- নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছুই নেই/ আছে শুধু ভালবাসা দিয়ে গেলাম তাই।

 

 

 

তিনি সবার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করে দেশকে যেন এভাবেই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন সেজন্য সবার নিকট দোয়াও চান আওয়ামী লীগের সভাপতি।

 

 

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সভামঞ্চের অনুষ্ঠানমালা সঞ্চালনা করেন।

 

 

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD