রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ পঞ্চম বিয়েতে সম্মতি না দেয়ায় চতুর্থ স্ত্রী সালমা বেগমকে (৩৫) কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল কেটে দিয়েছে বিয়ে পাগল স্বামী মোকলেচ মাতুব্বর। আহত সালমা বেগমকে স্বজনরা উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে।
এ দিকে বিয়ে পাগল মোকলেচকে পুলিশ গ্রেফতার করে বুধবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায় উপজেলার পাতাকাটা গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে। ওই গ্রামের হাতেম আলী মাতুব্বরের ছেলে মোকলেচ মাতুব্বর এ পর্যন্ত চারটি বিয়ে করেছেন। চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে পটুয়াখালী জেলার বোতলবুনিয়া গ্রামের মোনাসেফ সিকদারের মেয়ে সালমাকে আট শতাংশ জমি লিখে দিয়ে এ বছর জানুয়ারি মাসে বিয়ে করেন মোকলেচ। কিন্তু চতুর্থ স্ত্রীতে তিনি সন্তুষ্ট নন। তাই তো এবার পঞ্চম বিয়ে করার প্রস্তুতি নেন।
পঞ্চম বিয়ে করতে তিনি চতুর্থ স্ত্রীর কাছে সম্মতি ও জমির বিক্রি করে টাকা দাবি করেন। চতুর্থ স্ত্রী সালমা সম্মতি ও টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মোকলেচ নিজের ঘরে সিদ কেটে শ্বশুর বাড়ির দেয়া উপহারের বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যান। ওই সময় স্ত্রী সালমা বেগম বাড়িতে ছিলেন না। মঙ্গলবার বিকেলে সালমা বাড়িতে এসে ঘরে মালামাল না পেয়ে স্বামী মোকলেচকে জিজ্ঞেস করেন। বিয়ের সম্মতি, টাকা ও মালামাল নিয়ে কয়েক দফায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ওইদিন রাত ১০টার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কেটে বিছিন্ন করে দেন বিয়ে পাগল স্বামী। খবরে পেয়ে স্বজনরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। হাসপাতালের চিকিৎসক মো: শাহাদাত হোসেন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
এ দিকে বিয়ে পাগল মোকলেচের এমন কর্মকাণ্ডে পরিবারের লোকজন অতিষ্ঠ। তারা ওই দিন রাতে মোকলেচকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এ ঘটনায় বুধবার সালমার বাবা মোনসেফ সিকদার মোকলেচকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ওই দিন পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠনো হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, সালমা বেগমের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কেটে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শাহ আলম হাওলাদার বলেন, স্ত্রীকে মারধরের ঘটনায় মোকলেচের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
Leave a Reply