মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দেশের আলোচিত প্রতারক সাহেদকে গ্রেপ্তার নিয়ে নানাধরনের আলোচনার মধ্যেই চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এক ভণ্ড-প্রতারক কবিরাজকে। যিনি এক নারীকে গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন ৬৫ লাখ টাকা।
করোনাকালে মানুষ যখন প্রাণ বাঁচাতে সতর্কতার সঙ্গে জীবন যাপন করছেন, তখনই ভণ্ড-প্রতারকরা প্রতাপের সঙ্গে প্রচারণা করে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হওয়া ভণ্ড-প্রতারকের নাম হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। তিনি বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের পাইরং গ্রামের মো. জাকির আহম্মদের ছেলে।
তাকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি একজন নারীর সঙ্গে প্রতারণা করে ৬৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই নারী।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পাঁচলাইশ থানা এলাকার বাসিন্দা এক নারী ছেলের সংসার বাঁচানোর জন্য হাফেজ লিয়াকতের দ্বারস্থ হন। এই কবিরাজ ‘কোরআনি চিকিৎসা’র মাধ্যমে ছেলের অশান্ত সংসারে শান্তি এনে দিতে পারবেন বলে মাকে আশ্বস্ত করেন। এতে সরল বিশ্বাসে তিনি সাড়ে তিন লাখ টাকায় কবিরাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন এবং টাকা পরিশোধ করেন। টাকা পেয়ে কবিরাজ পবিত্র কোরআন শরীফের একাধিক সুরা পড়ে তাকে আমল করতে বলেন। আমল চলতে থাকে।
এরই মধ্যে কবিরাজ পুনরায় ওই নারীকে জানান, তিনি হাজিরা দেখে নিশ্চিত হতে পেরেছেন তার দেবরের জমির নিচে প্রায় সাড়ে তিন শ কোটি টাকার গুপ্তধন আছে। এসব গুপ্তধন তিনি সংগ্রহ করে দিতে পারবেন। এই গুপ্তধন পাইয়ে দিতে তিনি মোটা অংকের অর্থ দাবি করেন। পরে তারা ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন এবং ধাপে ধাপে ৬৫ লাখ টাকা কবিরাজের হাতে তুলে দেন তিনি। তারপরও কবিরাজ অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। ৬৫ লাখ টাকা দেওয়ার পর গুপ্তধন না পাওয়া পর্যন্ত আর টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওই নারী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিয়াকত আলী হুমকি দেন, টাকা না দিলে তার ছেলের সংসারে আরো ক্ষতি হবে। কবিরাজের কাছ থেকে এ ধরনের হুমকি পেয়ে বিষয়টি পাঁচলাইশ থানা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে আলফালাহ গলি এলাকা থেকে লিয়াকতকে গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে তার বাসা থেকে জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধার করে।
ওসি আবুল কাশেম বলেন, লিয়াকত আলী অন্ধ হিসেবে ভান ধরেন। কিন্তু তিনি অন্ধ নন। ৬৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। নতুন বউকে ৪০ লাখ টাকা দিয়েছেন ফ্ল্যাট কেনার জন্য। কিন্তু টাকা পাওয়ার পর ওই স্ত্রী লিয়াকতকে তালাক দিয়ে চলে যায়। ওসি বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply