রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ অপরাহ্ন
আনোয়ার হোসেন ॥ অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকের দখল গ্যারাকলে নগরীর জিলা স্কুলের খেলার মাঠ প্রায় অর্ধকোটি টাকার জমি দখল করে এক যুগ ধরে। শুধু তাই নয় আধা পাকা একাধিক স্থাপনা নির্মান করে বছরে প্রায় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারী পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। সূত্র মতে, বরিশাল সরকারী জিলা স্কুলের ৩ একর ৩৬ শতাংশ জমির মধ্যে পরেশ সাগরের মাঠের উত্তর সিমান্তের প্রায় ১৫ শতাংশ সম্পত্তি পলিটেকনিক্যাল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মন্নান প্রায় ১২ বছর যাবত দখল করে নিয়েছে। সেই দখলকৃত জমিতে টিনসেড দালান নির্মান করে ৫/৭ টি রুম তৈরী করে। প্রথমে কয়েক বছর নিজে বসবাস করে। পরে নগরীর কাকলির মোড় আবদুল্লাহ হোটেল মালিকের কাছে ভাড়া দেয়। যা বর্তমানে আবদুল্লাহ হোটেলের কর্মচারী ও রোজগার্ডেনের কর্মচারীরা ভাড়ায় বসবাস করছেন।
আবদুল্লা হোটেল মালিক বলেন, আমি মন্নান স্যারের কাছ থেকে টিনসেড দালানটি ভাড়া নিয়ে কর্মচারীদের থাকতে দিয়েছি এবং নিয়মিত ৭/৮ হাজার টাকা ভাড়া দিচ্ছি। অনুসন্ধানে জানাযায়, ২০১৪ সালে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জিলা স্কুল কর্তৃপক্ষ বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করার জন্য আবেদন করে। এর প্রেক্ষিতে তখন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গাজি তারিক সালমা সরেজমিনে সার্ভেয়ার দ্বারা জমি পরিমাপ করে মন্নানের দখলের বিষয়টি প্রমান হয়। পরে জবর দখলদার মন্নান তার নিজ উদ্যোগে তৈরীকৃত স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্র“তি দেয়। কিন্তু আজকাল করে দীর্ঘ বছর গড়িয়ে গেলেও স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছে না। এ ব্যাপারে আঃ মন্নান জানায়, এই জমি পলিটেকটিক্যাল কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসের। আমি তাদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে দালান করেছি এবং ভাড়া দিচ্ছি। সেটা দোষের কিছু না। যদি দোষ করে থাকে তাহলে পলিটেকনিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ দোষ করেছে, তাদের সাথে কথা বলুন আমার সাথে নয়।
সরকারী জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বরাত দিয়ে সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, বহুবার অবৈধ দখলদার আঃ মন্নানকে লিখিত নোটিশ দিয়ে জমি থেকে তার স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু প্রায় একযুগ ধরে সরকারী জিলা স্কুলের জমি দখল রেখেছে, বিষয়টি জেলা প্রশাসন দপ্তরে জানানো হয়েছে। সরকারী জমিতে স্থাপনা নির্মান করে ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে এ ব্যাপারে পলিটেকনিক্যাল কলেজের উপ-অধ্যাক্ষ আঃ রাকিব বলেন, হোক জিলা স্কুল বা পলিটেকনিক্যাল কলেজের, দুটোই সরকারী প্রতিষ্ঠান এর জমি দখল করে মন্নান ঘর নির্মান করে ভাড়া আদায় করছে এটা অত্যান্ত দুঃখজনক।
বিষয়টি তদন্ত করে মন্নানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মন্নান স্যার দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সরকারী পানি ও বিদ্যুৎ লাইন ও টিনসেড দালানে সংযোগ দিয়ে হাজার হাজার টাকা হজম করে নিচ্ছে। ১৫ শতাংশ জমি স্থানীয় ভাবে মন্নানের আত্মিয়-স্বজনদের ক্ষমতা বলে মন্নান সরকারী সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পলিটেকনিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Leave a Reply