বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৮ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার রাষ্ট্র পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আকরামুজ্জামান বলেছেন, নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তৃতীয় দিন রাষ্ট্রপক্ষকে আইন সহায়তা প্রদানের জন্য ফেনী আইনজীবী সমিতির পক্ষে নিয়োগকৃত জেষ্ঠ্য আইনজীবী আকরামুজ্জামান এভাবেই যুক্তি উপস্থাপন করেন। রোববার তাঁর যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়নি। তাঁর অসমাপ্ত বক্তব্য সোমবার উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
আদালতে আকরামুজ্জামান বলেন, এ মামলার অভিযোপত্রভুক্ত ১৬ জন আসামির মধ্যে ১২ জনকে বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম আদালতে স্বেচ্ছায়, সত্য ও স্বতস্ফুর্তভাবে ১৬৪ ধারায় তাঁদের জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এটি যাঁরা স্বীকারোক্তি দেয় নি- তাঁদের ওপরও বর্তায়। তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও অন্য সাক্ষীদের ১৬১ ধারায় সাক্ষ্য প্রদানের ভিত্তিতে অপর চারজনকেও আসামি হিসেবে অভিযোগপত্রভুক্ত করা হয়েছে। সবাই এ হত্যাকাণ্ডের সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত ছিলেন।
জ্যেষ্ঠ্য আইনজীবী বলেন, আদালতে আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের আগে বিচারিক হাকিম তাঁদেরকে (আসামি) স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দি দিলে বা দোষ স্বীকার করলে বিচারে শাস্তি হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন। আসামিদেরকে চিন্তা করার জন্য ৩-৪ ঘন্টা করে সময় দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, আসামিরা সবাই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতো। কেউ নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নেয়, কেউ হাত-পা বাঁধে, কেউ চেপে ধরে, কেউ কেরোসিন ঢালে, কেউ আগুন দেয়, কেউ সাইক্লোন শেল্টারের নীচে, কেউ মাদ্রাসার গেইটে পাহারা দেয়। কেউ প্রত্যক্ষভাবে আবার কেউ বাইরে থেকে মদদ দিয়ে সাহায্য করে। একই ঘটনায় তাঁরা সবাই দোষী।
তিনি বলেন- বোরকাসহ বিভিন্ন আলামত সমুহ উদ্ধার হয়েছে। নুসরাতকে কোরেসিন দিয়ে পোড়ানোর বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৮ এপ্রিল তাঁর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি ১০ এপ্রিল পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম তদন্ত শেষে ২৯ মে ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ৫ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোপত্রভূক্ত ১৬ জন আসামির মধ্যে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২জন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
Leave a Reply