বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:১৫ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ শাপলা চত্বরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের দায়ের করা মামলায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ পরোয়ানা জারি করেন। মামলার এজাহারে, ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ চলাকালীন গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গণজাগরণ মঞ্চের সদস্য ইমরান এইচ সরকার, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও হাসান মাহমুদ খন্দকার।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, হেফাজত নেতারা এই সমাবেশে যোগ দেয়ার মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে সমাবেশস্থলে সংঘর্ষ সৃষ্টি করেছিলেন। ২০১৩ সালের ৫ মে রাত ১১টার দিকে শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালালে মাদরাসা ছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। পরবর্তীতে নিহতদের লাশ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে গুম করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি, যা জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়া, একই মামলায় চারজন অভিযুক্ত যাদের বিরুদ্ধে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট মূলে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই চারজন বর্তমানে কারাগারে আছেন। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি।
এ মামলার বাদী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের সময় ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। গত ২৭ নভেম্বর হেফাজত ইসলাম মামলাটি দায়ের করার পর, আদালত তদন্তের জন্য মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত আরও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলামও বর্তমানে কারাগারে থাকায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলার প্রভাব বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। শাপলা চত্বরে হেফাজতের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া এখন বিচারালয়ের হাতেও পৌঁছেছে, এবং এটি সামনে আরও জটিলতর হতে পারে।
Leave a Reply