কবুতরের খামার প্রতিষ্ঠা করে সফলতা পেয়েছেন ভোলার যুবক মেহেদী হাসান Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




কবুতরের খামার প্রতিষ্ঠা করে সফলতা পেয়েছেন ভোলার যুবক মেহেদী হাসান

কবুতরের খামার প্রতিষ্ঠা করে সফলতা পেয়েছেন ভোলার যুবক মেহেদী হাসান

শখের কবুতরে ভাগ্য বদল করেছেন ভোলার যুবক মেহেদী হাসান,voiceofbarishal.com




ভোলা প্রতিনিধি: হাঁস-মুরগি, কিংবা গবাদিপশুর খামার প্রতিষ্ঠা করে সফলতা পেয়েছেন অনেকেই কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে কবুতরের খামার প্রতিষ্ঠা করে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন খুব একটা শোনা যায় না। নীরবে-নিভৃতে সেই কাজটি করেছেন ভোলার যুবক মেহেদী হাসান।

জেলার দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় বাসার ছাদে এই যুবক শখের বশে মাত্র ২০টি বিদেশি জাতের কবুতর দিয়ে খামারের যাত্রা শুরু করেন। এরপর শুধুই সফলতার গল্প। এখন তার খামারে নানা প্রজাতির ১৫০ জোড়া কবুতর রয়েছে। আর সেখান থেকে সব খরচ বাদ দিয়ে মাসিক আয় হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কোনো কোনো মাসে আয় হয় এর চেয়ে বেশি। কঠোর পরিশ্রম আর কবুতরের প্রতি নিবিড় ভালোবাসা শিক্ষিত এই বেকার যুবককে এনে দিয়েছে সফলতা। পাশাপাশি ঘুচেছে বেকারত্বের অভিশাপ।

মেহেদির দেখাদেখি ৫০ জনেরও বেশি বেকার যুবক এখন কবুতর পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তার পরামর্শ নিয়ে তারা কবুতর পালন শুরু করেছেন। অন্যদিকে তার সহায়তায় বাংলাবাজারে একটি কবুতরের দোকানও চালু হয়েছে।

সরেজমিন বাংলাবাজার এলাকায় মেহেদির খামারে গিয়ে দেখা যায়, তিনি কবুতর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। লোহার গ্রিল চারপাশে ও ওপরে টিনশেড দেওয়া হয়েছে খামারে। খাঁচার মধ্যে শোভা পাচ্ছে হরেক প্রকার কবুতরের সারি।মেহেদী জানান, ২০১৭ সালে স্নাতক শেষ করে শখের বসে ২০ জোড়া কবুতর নিয়ে খামার শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই কবুতরের প্রতি গভীর ভালোবাসা আর মমতা ছিল তার।

পর্যায়ক্রমে গত দুই বছরে খামারে কবুতরের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরপর অনলাইন ও ফেসবুকে তার কবুতরের বাচ্চা বিক্রির বিজ্ঞাপনে বেশ সারা পড়ে যায়। তার উৎপাদিত কবুতরের বাচ্চা অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই ভোলা, বরিশাল, খুলনা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা শুরু করেন।

তিনি জানান, খামারে বিভিন্ন জাতের কবুতরের মধ্যে এক লাখ টাকা মূল্যের আরএসপি কোএলমোন্ড জাতের কবুতর রয়েছে, যার প্রতি জোড়া বাচ্চার মূল্য ৪০ হাজার টাকা। রয়েছে ৪০ হাজার টাকা দামের লাহরী (লাল), এর বাচ্চার দাম ১৫ হাজার। বোখরা হোয়াইট টব কবুতর, যার দাম (প্রাপ্তবয়স্ক) জোড়া প্রতি বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা, আর বাচ্চার দাম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।

এ ছাড়া আরএসপি পোর্টার (ব্লু) রয়েছে ৩০ হাজার টাকা দামের, এগুলোর বাচ্চা বিক্রি হয় ৮ হাজার টাকায়। এ ছাড়া পূর্ণ বয়স্ক ডেনিস (সাদা) জোড়া বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা, ডেনিস (হলুদ) ১৫ হাজার, হাউস পিজন ১২ হাজার, ১০ হাজার টাকার কোকা বাসিরাজসহ বিভিন্ন জতের আকর্শনীয় রঙের কবুতর রয়েছে। এ ছাড়া পেনসিল পোর্টার, হেনা পোর্টার, কুমারিয়ান, উলো মালটেসসহ ৩০ প্রজাতির বেশি কবুতর রয়েছে মেহেদীর খামারে।

কবুতরপ্রেমী মেহেদী হাসান আরো জানান, কবুতর পালনে তেমন একটা পরিশ্রম করতে হয় না। সকাল-বিকাল দুই ঘণ্টা করে মোট চার ঘণ্টা সময় দিলেই হয়। এসব কতুরকে ধান, গম, চিনা, এংরা, ডাবলিসহ প্রায় ১৫ ধরনের খাবার মিশিয়ে দিতে হয়। দৈনিক তার এক হাজার টাকার খাবার দিতে হয়। কবুতরের তেমন রোগবালাই হয় না। আর রোগ হলে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে চিকিৎসা সম্পর্কে জানা যায়। একই সাথে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে রোগের সমাধান পাওয়া যায়।

বাংলাবাজার এলাকায় মেহেদী হাসানের কাছ থেকে কবুতর নিয়ে দোকান দিয়েছেন মো. ফয়সাল। তিনি বলেন, এই এলাকায় দেশি কবুতরের চাহিদা থাকলেও বিদেশীর তেমন বাজার ছিল না। কিন্তু মেহেদীর খামারের সফলতা দেখে এখন অনেকেই উন্নত জাতের কবুতর কিনছেন। বর্তমানে এখানে সীমিত হলেও বিদেশি কবুতরের বাজার সৃষ্টি হয়েছে।

কবুতর শিল্পের প্রধান সমস্যার কথা উল্লেখ করে খামারি মেহেদী বলেন, কবুতর বিদেশ থেকে আমদানি করা গেলেও বাংলাদেশ থেকে বিদেশে রপ্তানি করা যায় না। তাই এ শিল্পের আরো সম্প্রসারণের জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। একই সাথে আরো বৃহৎ পরিসরে খামার গড়ে উদ্যেক্তা হওয়ার স্বপ্ন মেহেদীর।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, কবুতর পালন একটি শখের বিষয় হলেও তা বর্তমানে বেশ লাভজনক। এর মাধ্যমে বেকারত্ব দূরসহ বাড়তি আয়ের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের খামার করা একটি ভালো ব্যাপার। বর্তমানে জেলায় অনেকেই বিদেশি কবুতর পালন করছেন। আমাদের যুব সমাজকে যদি এই শিল্পের সাথে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, তবে এই খাত আরো সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD