রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা কামনা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জঁ-পিয়েরে ল্যাক্রোয়ার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।
বৈঠকে চলমান মিয়ানমার সংকট, সীমান্তে গুলিবিনিময় এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “সীমান্তে গোলাগুলি ও উত্তেজনা কেবল সীমান্তবর্তী মানুষদের জীবন-জীবিকায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে না, একইসাথে এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ায় এ অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়ছে।”
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাম্প্রতিক কক্সবাজার সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই সফর প্রত্যাবাসনের আশাকে আবারও জাগিয়ে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মহলের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এই সংকট সমাধান সম্ভব নয়।” তিনি প্রত্যাশা করেন, মিয়ানমার সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনে গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। ড. ইউনূস জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১১টি শান্তিরক্ষা মিশনের মধ্যে ১০টিতে ৫ হাজার ৬৭৭ জন সদস্য পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, “নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শান্তিরক্ষা মিশনেও নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এ সময় তিনি জাতিসংঘের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমের র্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট লেভেলে পাঁচটি ইউনিট প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
জঁ-পিয়েরে ল্যাক্রোয়া জানান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারীদের আরও বিস্তৃত ভূমিকা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। তিনি বলেন, “নারীদের শুধু নির্দিষ্ট দায়িত্বে সীমাবদ্ধ না রেখে নেতৃত্বের জায়গায়ও দেখতে চায় জাতিসংঘ।”
বৈঠকে জানানো হয়, আগামী ১৩-১৪ মে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবে। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা।
মানবাধিকার রক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং জবাবদিহিতা জোরদারে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়াতে আগ্রহী বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করে শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply