যুবলীগ নেতা নামধারি মিজানের ত্রাসে দুর্গা সাগর এখন দর্শনার্থীহীন Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




যুবলীগ নেতা নামধারি মিজানের ত্রাসে দুর্গা সাগর এখন দর্শনার্থীহীন

যুবলীগ নেতা নামধারি মিজানের ত্রাসে দুর্গা সাগর এখন দর্শনার্থীহীন




নিজস্ব প্রতিনিধি॥  চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজ ও এলাকার স্থানীয় ক্ষমতাধর মিজান বাহিনীর দাপটে বরিশালের ঐতিহ্যবাহি মাধবপাশা ইউনিয়নের দুর্গা সাগর এখন পর্যটকশুন্য হয়ে পরেছে। অবৈধ প্রস্তাব মেনে না নেয়ায় সাগরের পর্যবেক্ষনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেনঠাসা হয়ে পরেছে। বরিশাল জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তা হয়েও বিশাল আকৃতির দীঘিটির রক্ষনাবেক্ষন করা ওই কর্মকর্তার পক্ষে একরকম অসম্ভব হয়ে পরেছে। মিজানের সাঙ্গ-পাঙ্গদের অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং টেন্ডারবাজিতে বাধা দেয়ায় ইতোমধ্যে নাজির সাইদুল ইসলাম সাঈদকে প্রান নাসের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। সরেজমিন অনুসন্ধান এবং ভুক্তভোগি নাজির এবং সাগরে দ্বায়ীত্বপ্রাপ্ত কর্মচারিরা জানায়, ইতোপূর্বে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষনিক এলাকাটিকে নিজেদের একটি সম্পদ মনে করে সকল ধরনের সহযোগিতা করেছে।

বিশেষ করে জেলা প্রসাশকের আওতায় চলে আসার পরে কয়েকটি বিশেষ পদক্ষেপ যেমন ,পর্যটক সংখ্যা বৃদ্ধি,পর্যটকদের নিশ্চিত বিচরন,কোটি টাকার মৎস সম্পদ রক্ষা,পুকুর পারের কয়েক’শ গাছের পরিচর্যা, সম্প্রতি স্থাপনকৃত প্যাডেলবোটসহ প্রাচীন ঐতিহ্য রক্ষা করা এখন কঠিন কাজ হয়ে দাড়িয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান তার দপ্তরের নাজির সাঈদ আহম্মেদকে সার্বিক বিষয়ে তদারকির দায়িত্ব প্রদান করে। নগরী থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দুরে হলেও ওই কর্মকর্তা প্রায় প্রতিদিন দীঘিতে সময়মত অবস্থান করে সার্বিক বিষয়ে তদারকি করা শুরু করে দেয়। এতে করে পূর্বের জড়াজীর্ন অবস্থা কাটিয়ে উঠে অনেকটা প্রান ফিরে পায় এই এলাকাটি। বিনা টিকেটে অভ্যন্তরে প্রবেশ, দর্শনার্থীদের হয়রানি বা তাদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ, বিনা টিকিটে মাছ ধরে নেয়াসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড একদম বন্ধ হয়ে যায়।

বিষয়টি শু-নজরে নেয়নি এলাকার এক নব্য যুবলীগ নেতা মিজান, তিনি তার পালিত স্থানীয় রানা রাজিবসহ বিশ পচিশ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগে সকালে জোরপূর্বক সাগরপারে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় নাজির নিজে উপস্থিত থাকায় কাউকে বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে নিশেধ করে। এতে সুরভী লঞ্চের ম্যানেজার মিজান ও তার দলবল ক্ষিপ্ত হয়ে নাজিরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তার সঙ্গীয়রাজু, রানা, রাজিবসহ আন্যান্যরা নাজিরকে মারধরের চেষ্টা চালায়, পরে সাগরে দ্বায়ীত্বরত কর্মচারিরা বাধা দিয়ে নাজিরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। তবে, প্রস্থানের সময় নাজিরের অফিস কক্ষে লাথি মারে এবং বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে না দিলে ওই এলাকায় থাকতে পারবেনা বলে হুমকি দেয়।

এমনকি দীঘির বাহিরে বের হলে প্রানে মেরে ফেলার কথাও বলে। এ বিষয়ে নাজির সাঈদুল ইসলাম সাঈদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের নিজ উদ্দোগে দর্শনার্থী বৃদ্ধি এবং সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষে প্রথমবারের মত প্যাডেলবোড চালু এবং হাস,মুরগির পালন শুরু হয়। সেইসাথে দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে হরিন,বানর উটপাখিসহ নানা প্রজাতির পশু পাখি রাখা হয়।

এজন্য প্রবেশপথের কাছেই বিশাল আকৃতির খাঁচা তৈরী করে দেয়া হয়। এইসব কাজের জন্য যেমন দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে,তেমনি রাজস্ব আয়ও বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি। নাজির সাঈদ জানায়, খাাঁচা তৈরীর সময় মিজান বাহিনী ওই খাাঁচা তৈরী এবং আনুসাঙ্গিক আরও কিছু কাজের ঠিকাদারি কাজের টেন্ডার নিজে করতে চেয়েচিলেন। তবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিজস্ব ঠিকাদার থাকায় ওই কাজ মিজানকে দেয়া কোন ক্রমেই সম্ভব ছিলনা। এছাড়া তার সন্ত্রাসী বাহিনী সাগরপারে দুর দুরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের অনেকটা জিম্মি করে অর্থ আদায় করতো। মূলত এসব কাজে বাঁধা এবং টিকাদারি কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মিজান বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়। এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, ইতোপূর্বে মিজান বাহিনীর সেচ্ছাচারিতায় দীঘিতে সাধারন মানুষ পবেশ করতেই ভয় পেত।

যারা অজান্তে প্রবেশ করতো, তাদের নিকট থেকে অর্থ আদায় করে সর্বশান্ত করে ছেড়ে দেয়া হতো, অনেক সেক্ষেত্রে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত পর্য়ন্ত করা হতো। এছাড়া দিনে এবং রাতের আধারে জাল দিয়ে দিঘীর মুল্যবান মাছ ধরে নিয়ে যেত, সেইসাথে যার যখন প্রয়োজন পুকুর পারের মুল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যেত। বর্তমানে হাস মুরগির ডিম থেকে ,মাছ ধরার টিকেট বাবত এবং দর্শনার্থীদের প্রবেশ মুল্য কঠোর নজরদারিতে থাকায় সরকারি রাজস্ব বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুন। যা ওই দপ্তরের লেজার খাতা পর্যবেক্ষন করলেই প্রমান মিলবে।

মূলত দুর্গা সাগর বরিশালে প্রচীন ঈতিহ্যের একটি ধারক ও বাহক, প্রতি বছর দেশি,বিদেশি বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পর্যটক এবং দর্শনার্থী এই স্থানটি পরিদর্শনে আসেন। শীতের সময় থাকে অতিথি পাখির বিপুল সমারোহ, যা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষন। এছাড়া শীতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ অবসর বিনোদন এবং বনভোজনে এখানে জমায়েত হয়।

তখন তাদের কলরবে মূখর থাকে স্থানটি। তবে বর্তমানে কতিপয় ব্যাক্তির অনৈতিক কর্মকান্ডে সে অবস্থা অকুলেই নিঃশেষ করে দিয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসি।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জয়নাল হাওলাদারের আবেদিনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি জানান, সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের সাথে এলাকার কয়েকজন যুবকের সাতে ভুল বোঝাবোজি হয় পরে তিনি বিষয়টি মিমাংশা করে দেয়। জেলা প্রশাসক অজিয়র রহমান বলেন,এ দরনের কোন ঘটনা তার জানা নেই তবে, দুর্গা সাগরের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD