বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ মিয়ানমার প্রথম ধাপে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তালিকা পর্যালোচনা করে তারা এই সংখ্যা নির্ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ছয় ধাপে মিয়ানমারের কাছে রোহিঙ্গাদের তথ্য সংবলিত মূল তালিকা হস্তান্তর করেছিল। বর্তমানে আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গার নাম ও ছবি যাচাই-বাছাইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে মিয়ানমার নিশ্চিত করেছে যে বাকি ৫ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার তথ্য পর্যালোচনার কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা হবে।
শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউ থান শোয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
এটি প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য মিয়ানমারের কাছ থেকে নিশ্চিত তালিকা পাওয়া গেল, যা সংকট সমাধানের দিক একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
এদিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, অতীতেও কয়েকবার প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হলেও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতাও এই প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। এছাড়া, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য আরও মানবিক সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথাও জানানো হয়।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে অবস্থানের কারণে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে। নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তার অভাবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে।
মিয়ানমারের কাছ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য তালিকা পাওয়া গেলেও এখনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। তাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছায় এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হলে কাউকে ফেরত পাঠানো হবে না।
Leave a Reply