রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধাক্কা দিল প্রতিবেশী দেশ ভারত। ভারত সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দিয়েছে, যা বিশেষ করে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা এখন নতুন সংকটের মুখে পড়েছেন, কারণ ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হওয়ায় সেই সব দেশে পণ্য পাঠানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে আগামীকাল জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত অশনি সংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈঠকে এ সংকট মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। ভারতীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য পাঠানোর সরাসরি পথ বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে রপ্তানিকারকদের চরম বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের স্থলপথ ছাড়া এইসব দেশে পণ্য পাঠাতে হলে খরচ এবং সময়—দুটি বিষয়ই বহুগুণ বেড়ে যাবে। এছাড়া, ভারতীয় বিমানবন্দরগুলো, বিশেষ করে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের বিষয়টি এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যও যেভাবে পাঠানো হত, এখন সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হতে পারে।
রপ্তানিকারকরা জানান, এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে খাদ্যপণ্য রপ্তানিকারকরা। বিশেষ করে ড্যানিশ ফুডের হেড অব বিজনেস দেবাশীষ সিংহ জানিয়েছেন, “এখন ভুটান, নেপাল কিংবা মিয়ানমারে খাদ্যপণ্য পাঠানো কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।” তিনি জানান, ওইসব দেশে পৌঁছানোর আর কোনো সরাসরি বিকল্প পথ নেই।
এদিকে, ভারতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতের পত্রিকা “ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস” জানিয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে বাংলাদেশে চিন্তিত ভারত সরকার। তাই, তারা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে।
ব্যবসায়ী মহল থেকে দাবি উঠেছে, বাংলাদেশকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-তে এই বিষয়ে অভিযোগ জানানো উচিত। তারা মনে করছেন, ভারত সরকারের এমন হঠাৎ সিদ্ধান্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের পর ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে। একই সঙ্গে বিকল্প রুট খোঁজা বা কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
Leave a Reply