শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পূর্বাহ্ন
আমজাদ হোসেন, বাউফল প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর বাউফলে আ,লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় খুন হওয়া যুবলীগ কর্মী তাপস কুমার দাসের হত্যা মামলায় প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমানকে আসামি করার প্রতিবাদে ও মামলা থেকে অব্যাহতির দাবিতে আজ রোববার মানববন্ধন করেছে স্থানীয় সাংবাদিকেরা।
বাউফল প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আজ বেলা ১১ টার দিকে বাউফল প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সাংবাদিক মিজানের বাবা আবদুস ছালাম ও ছেলে আফফান উপস্থিত ছিলেন।
মিজান বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক দুইবারের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যকরী পরিষদের নির্বাহী সদস্য। মানববন্ধনের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাউফল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জনকণ্ঠের কামরুজ্জামান বাচ্চু, সমকালের জিতেন্দ্র নাথ রায়, মানবকণ্ঠের জসিম উদ্দিন, মিজানের বাবা আবদুস ছালাম প্রমুখ। জসিম উদ্দিন বলেন, আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে এই মানববন্ধনে না আসার জন্য।
মিজান ভাইকে হয়রানিমূলক মামলায় আসামি করার প্রতিবাদ করলে আমাকেও নাকি ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের মধ্যে অন্তভর্’ক্ত করা হবে।
আমার মত অনেককেই হুমকি দেওয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা মানববন্ধনে এসেছি। কারণ মিজান ভাই হয়রানির শিকার এ কথা বাউফলের সবাই জানে। যার ভিডিও প্রশাসনের কাছেও সংরক্ষণে আছে।
কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন,‘ঘটনার শুরুর দিকে মিজান ছিলেন না। আমিসহ কয়েকজনের ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। আমাদের সঙ্গে থেকেই পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন মিজান। অথচ তাঁকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এটা খুবই দুঃখজনক। আমি অনতিবিলম্বে হত্যা মামলা থেকে মিজানের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। জিতেন্দ্র নাথ বলেন,‘ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
পাশাপাশি নিরাপরাধ সাংবাদিক মিজানকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ মিজানের বাবা অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুস ছালাম মিয়া বলেন,‘বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের জেরে আমার ছেলেকে বারবার মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
অন্যায়ভাবে তাঁকে শিক্ষকতার চাকুরি থেকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। আমার পুত্রবধূ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাঁকেও কয়েক দফায় হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে।
হাইকোর্টে রিট করে তাঁকে চাকুরি করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন,এর আগেও আমার ছেলেকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, লুটপাট, মারামারি ও গণধর্ষণসহ ছয়টি মামলায় আসামি করা হয়। সব মামলা মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। সম্প্রতি সরকার দলীয় নেতাদের অনিয়মের বিষয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন।
সেই জেরে এবার আমার ছেলেকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ওই খুন মামলা থেকে মিজানের অব্যাহতি দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
উল্লেখ্য,ঈদের আগের দিন ২৪ মে, রোববার বাউফল পৌরসভার উদ্যোগে থানার পূর্ব পাশে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনের সড়কের খালি জায়গায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাস্থ্য বিধি নির্দেশনা সংবলিত ব্যানার স্থাপন করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারি ঘটনায় যুবলীগকর্মী তাপস কুমার দাস খুন হয়। তাপসের বাড়ি কালাইয়া ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামে।
তাঁর বাবার নাম বদু দাস। এ মামলায় ২৫ মে রাতে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েলকে হুকুমের আসামি করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রাহাত জামশেদসহ ৩৫ জনের নামে মামলা করেন নিহত তাপসের বড় ভাই পঙ্কজ চন্দ্র দাস। ওই মামলায় ২০ নম্বর আসামি করা হয় সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে।
Leave a Reply