ডেস্ক রিপোর্ট ॥ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করার এক মাসের মধ্যেই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য গঠিত এই দলটি এখন দলীয় ফোরামের বাইরে ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টের কারণে বিতর্কের মুখে পড়েছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ পরস্পর বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন। দলের নেতাদের মধ্যে এই বিতর্কের ফলে দলের ভেতরে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বৃহস্পতিবার, যখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এর পর হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি দাবি করেন, গত ১১ মার্চ তাকে ও তার কিছু সহকর্মীকে ক্যান্টনমেন্টে ডেকে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই পোস্টের পর থেকে বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে নানা আলোচনা শুরু হয়।

প্রতিক্রিয়া জানাতে শনিবার (২২ মার্চ) সেনাসদর থেকে জানানো হয়, হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্ট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি এবং ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এর পর দলের আরেক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুকে একটি পোস্ট করে বলেন, এই ধরনের ব্যক্তিগত পোস্ট দলীয় পরিবেশ এবং সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

এ ছাড়া, দলের সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ কমেন্ট করেন, “এটা চলতে পারে না। দুইজনের একজন মিথ্যে বলছেন।” দলের অন্যান্য নেতারা ও সদস্যরা এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, কোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত না নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা একে ‘ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা অর্জনের রাজনীতি’ বলে অভিহিত করেছেন।

দলের নেতাদের দাবি, এই ধরনের কর্মকাণ্ড দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে এবং দলের শৃঙ্খলা ও ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন গণমাধ্যমে আশ্বস্ত করেছেন যে, দলীয় চেতনা অক্ষুণ্ণ রয়েছে এবং ঈদের পর দলীয় সংবিধান এবং আচরণবিধির খসড়া তৈরির কাজ শুরু হবে।

এদিকে, এনসিপির পক্ষ থেকে শুক্রবার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির অবস্থান জানানো হয়, তবে সেনাপ্রধানের বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট মন্তব্য করা হয়নি।