প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে উঠতে পারে হিরন সমর্থকরা ! Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে উঠতে পারে হিরন সমর্থকরা !

প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে উঠতে পারে হিরন সমর্থকরা !




 

স্টাফ রিপোর্টার: রাত পোহাইলে আজ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কাংখিত ভোট গ্রহন। নির্বাচনের মুল প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিকেই হিসাব করছে ভোটাররা। এই দুই দলের মধ্যেই প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থান ধরে নিয়েছেন তারা। তাই দুই দলের জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি দলীয় ভোটের গুরুত্বও রয়েছে অনেক। আর তাই দলীয় ভোট নিয়ে বিএনপি রয়েছে নিশ্চিন্ত। তবে আওয়ামী লীগ দলীয় ভোট নিয়ে শংকা কাটেনি দলটির নেতা-কর্মীদের।

কেননা আজ ভোট গ্রহনের দিন প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে উঠতে পারে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের একটি অংশ। যারা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক জননন্দিত মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন অনুসারী এবং ভক্ত হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পরে শওকত হোসেন হিরন’র দেয়া সেই বক্তব্য তার অনুসারীদের বিদ্রোহী করে তুলতে পারে বলেও মনে করছেন দলের বিশেষ মহল। অবশ্য এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনিত মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সেই শংকা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বলে মনে করছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। ফেলে আসা অতিত ভুলে নৌকার বিজয়ে সবাই একমত বলে মনেও অভিমাত নেতাদের।

আওয়ামী লীগের দলীয় এবং সমর্থকরা জানায়, ২০০৮ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন শওকত হোসেন হিরন। যার বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের অভিভাবক খ্যাত মন্ত্রী পদমর্যাদার আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি’র হাত ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন ঘটেছিলো। তিনি নির্বাচিত হয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার চিত্র পাল্টে দেন। আধুনিক গ্রীন সিটি ও উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত করেন বরিশালকে।

তবে রাজনৈতিক ভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়েন বর্তমান মন্ত্রী পদমর্যার আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি ও তার পরিবারের সদস্যরা। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়ার সুবাধে তৎকালিন সময়ে রাজনীতিতে ব্যকফুটে চলে যেতে হয় তাকে। বর্তমান সময়ে বরিশালের কালিবাড়ি রোড রাজনীতির রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেলেও তৎকালিন সময়ে বরিশালের রাজনীতির রাজধানী ছিলো নূরীয়া স্কুল সংলগ্ন হিরন পয়েন্ট। নেতা-কর্মী আর সমর্থক শূণ্য অবস্থায় ছিলো কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনটি।

এদিকে নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নমুখি চিন্তাধারা, নগর উন্নয়ন সহ সহবস্থানের রাজনীতির কারনে দলীয় ও সাধারণ মহলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শওকত হোসেন হিরন। যার প্রমান মেলে ২০১৩ সালের নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেলেও বিএনপি’র প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল’র কাছে ১৭ হাজার ভোটে পরাজিত হন তিনি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা সত্যেও শওকত হোসেন হিরন’র পরাজয়ের কারন হিসেবে তিনি সরাসরি ভাবে তিনি অভিযোগ তোলেন বর্তমান মন্ত্রী পদমর্যাদার আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।

২০১৩ সালের ১৮ জুন বরিশাল ক্লাব চত্ত্বরে মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালিন নেতা কেবিএস আহম্মেদ কবির’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনত্বর কর্মীয় শওকত হোসেন হিরন শত শত নেতা-কর্মীদের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ছিলেন। সেই কর্মী সভায় তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন “আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, তার শ্যালক কাজী কামাল, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান, হাসনাতের বন্ধু জাহাঙ্গীর বিএনপি’র প্রার্থী আহসান হাবিব কামালের পক্ষে কাজ করেছেন। তারা ‘টেলিভিশন’ (বিগত নির্বাচনে মহাসজোট সমর্থীত মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন হিরনের নির্বাচনী প্রতীক) এর স্টিকার লাগিয়ে বিএনপি’র প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল’র ‘আনারস’ প্রতীকে ভোট দিয়েছে। মাহমুদুল হক খান মামুনকে আমার বিদ্রোহী প্রার্থী করেছিলো।

তিনি আরো বলেছিলেন, খান মামুন প্রার্থী হওয়ার আমার কোন ক্ষতি হয়নি। বরিশালবাসি আমাকে ভোট দিয়েছে। তারা আমার উন্নয়নের প্রতিদান দিয়েছে। কিন্তু আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকেরা আমাকে ঠকিয়ে দিয়েছে। দলের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই হাসনাত আব্দুল্লাহ সবাইকে কোনঠাসা করে রাখেন। দক্ষিণাঞ্চল থেকে কাউকে নেতা হতে দেয়নি হাসনাত আব্দুল্লাহ। মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম, মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ, এনায়েত পীর খানের মতো নেতাদের সব সময় কোনঠাসা করে রেখেছেন বলে কর্মী সভায় সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন হিরন।

ওই সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফজালু করিম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম জাহাঙ্গীর, মহানগর শ্রমিক লীগের তৎকালিন আহ্বায়ক আফবাত হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে নির্বাচন পরবর্তী শওকত হোসেন হিরন’র ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দেয়া ওই বক্তব্য আজো গেছে আছে তার কর্মী সমর্থকদের অন্তরে। তাইতো নির্বাচন পরবর্তী আওয়ামী লীগের হাল ধরা সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র কাছে ভেড়েনি হিরন সমর্থকরা। তবে পর্যায়ক্রমে জোয়ার আসে সাদিক আবদুল্লাহ পালে। সাদিক আবদুল্লাহ’র দক্ষ নেতৃত্ব এবং প্রচেষ্টায় ঘুড়ে দাড়ায় মহানগর আওয়ামী লীগ। সেই সাথে হিরন অনুসারীরা মেনে নেন সাদিক আবদুল্লাহ’র নেতৃত্ব।

দীর্ঘ সময় এড়িয়ে থাকা আফজালুল করিম মনোনয়ন লোভে ভীরেছেন আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ’র ঘাটে। মেজবাহ উদ্দিন জুয়েল, এমনকি শওকত হোসেন হিরন’র সহধর্মীনি জেবুন্নেছা আফরোজও হিরনের স্বপ্ন পুরনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে সমর্থন জানায় সাদিক আবদুল্লাহকে। বরিশালে একমাত্র সাদিক বিরোধী ছিলেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন। নির্বাচনে নৌকার টিকেট পাওয়ার পরে তিনিও নোঙ্গর করেন সাদিক আবদুল্লাহ’র ঘাটে।

তাছাড়া মনোনয়নের দাবীদার ছিলেন কর্ণেল অব. জাহিদ ফারুক শামীম এবং মাহমুদুল হক খান মামুন। তাদের মধ্যে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় শেষ সময়ে সাদিক আব্দুল্লাহ’র পাশে দাড়ান জাহিদ ফারুক শামীম। কিন্তু বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে ঐক্য হওয়ার পরেও ভোট নিয়ে শংকা কাটছে না দলীয় প্রার্থী ও তার সমর্থক মহলে। কেননা ২০১৩ সালের পরে হিরনের বক্তব্য শোনা সেই নেতা-কর্মী এবং সমর্থকরা প্রতিশোদ নিতে ভোটের ব্যালটে বিদ্রোহী হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।

অবশ্য এরই মধ্যে সাদিক বিরোধীরা বিভিন্ন ভাবে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছেন। বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মঈন তুষার সহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নির্বাচন নিয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, কোন ব্যক্তি নয়, আওয়ামী লীগের নৌকায় ভোট দিবেন। তাই আজ ৩০ জুলাই’র নির্বাচনে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র বিজয় সুনিশ্চিত বলে ধরে রেখেছেন দলটির নেতা-কর্মী এবং সমর্থকরা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD