শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:বরিশাল নগরীর ফিশারীরোডে আবাসিক হোটেল রিয়া’র অন্তরালে অনৈতিক বাণিজ্যে লিপ্ত হয়েছে লালমোহনের গজারিয়া কচুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহাদ আলী মাস্টার।
ভবন মালিক বরিশালের প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা ও নথুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে হোটেল রিয়া নাম দিয়ে পতিতা ও কর্লগাল বাণিজ্যের মহাৎসবে মেতে উঠেছে সে। যেখানে বরিশালের মূল শহরে প্রশাসনের কড়া নজরদারী থাকায় এসব অনৈতিক কর্মকান্ড থমকে দাড়িয়েছে সেখানে আহাদ আলীর এ অসামাজিক কার্যকলাপে মহল বিশেষে নানা প্রশ্ন গুঞ্জরিত হচ্ছে।
জানা গেছে, শ্রমিক নেতা আফতাব হোসেনের কাছ থেকে ভোলা লালমোহন থেকে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে আসা স্কুল শিক্ষকদের বিশ্রাম ও থাকার কথা বলে ভবনটি ভাড়া নেয় চতুর স্কুল মাস্টার আহাদ আলী। কিন্তু বর্তমানে তার পূত্র ও নানা কর্মকান্ডে বিতর্কিত, প্রতারক বেলাল ওরফে মিঠু এবং একজন ম্যানেজার নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে আবাসিক হোটেলের অন্তরালে বেসামাল পতিতা/ কলগার্ল বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এমনকি কলেজ পড়ুয়া প্রেমিক প্রেমিকাদের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে হোটেলটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সংশ্লিস্ট সূত্র আমাদের বরিশালকে নিশ্চিত করেছেন, হোটেল রিয়ায় ঘন্টা প্রতি ৫’শ ১ হাজার টাকা দিয়ে মেয়ে নিয়ে ফূর্তি করা যায়। এখানে আসা খদ্দেরকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন। আর এসব মরন ফাঁদে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা। পাশাপাশি স্কুল-কলেজের নামে চলে যাচ্ছে এসব বাজে জায়গায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খদ্দেরের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখানে আসা মাত্রই বিভিন্ন কৌশলে লোভ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এ হোটেলে। আর হোটেলে একবার প্রবেশ করলেই হল। যেন জলে কুমির ডাঙায় বাঘ। এ হোটেলটিতে পতিতাবৃত্তি করছে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অপ্রাপ্ত তরুনীরা, কেননা তাদের চাহিদা খদ্দেরের কাছে বেশি। কোমলমতি অপ্রাপ্ত তরুনীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আবার কাউকে প্রেমের ফাদে ফেলে এ পেশায় যুক্ত করছে দালাল চক্র।
সূত্রটি আরও জানায়, টাকা হলে যেকোন বয়সের তরুনী কিংবা মেয়েদের সরবরাহ করে থাকে হোটেল রিয়া কর্তৃপক্ষ। তবে পছন্দের ক্ষেত্রে একদিন আগে অর্ডার ও বুকিং দিতে হয়। জানা গেছে, আহাদ মাস্টারের পূত্র বেলাল ওরফে মিঠু নিজের ভিজিটিং কার্ডে এমএল বেলাল নামে পরিচিত। সে নিজেকে ডেসটিনি পত্রিকার ভোলা ব্যুরো প্রধান পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে নানা ধরনের প্রতারনা ও ছলচাতুরী করে আসছে। তবে ভোলা ও লালমোহনে কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকরা জানান, তারা বেলাল নামের কোন সাংবাদিককে চিনেন না বা নামও শুনেন নি। বেলাল কখনো নিজেকে ঢাকা ও বরিশালের বিশিষ্ট আ’লীগ নেতার আতœীয় পরিচয় দিয়ে মানুষকে ধোকা দেয়ার মাধ্যমে ধান্দাবাজি করে আসছে। লালমোহনের গজারিয়া গরুর হাট এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, আহাদ মাস্টার ও তার পূত্র বেলাল হোসেন মিঠু বরিশালে ব্যবসা করে কিন্তু কিশের ব্যবসা করে তা এলাকায় কেউ জানে না।
একাধিক উৎসুক এলাকাবাসী জানতে চাইলেও তারা বিষয়টি এড়িয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিস্ট সূত্র। তবে স্থানীয় প্রভাবশালী ২ ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, আহাদ মাস্টার কচুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেও সে নানা কর্মকান্ডে বিতর্কিত। বিভিন্ন সময় নারী কেলেঙ্কারীর সাথে জড়িয়ে পড়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। বরিশালে আবাসিক হোটেল বাণিজ্যের খবর তার গজারিয়ার অসংখ্য ব্যাক্তি জানতে পেরে তারা জানান, আহাদ মাস্টার ও তার পূত্র বেলালের আলুর দোষ আছে এ কথা সত্য। এ জন্যই ওরা আমাদের কাছে এ ব্যবসায় কথা লুকিয়ে রেখেছে।
এব্যাপারে বিমানবন্দর থানার ওসি তদন্ত অাব্দুর রহমান মুকুল জানান, এ হোটেলটির প্রতি তার নজরদারি রয়েছে। তবে এখনও অভিযান চালানোর সুযোগ হয়নি। যেকোন সময় অভিযান পরিচালনা করে অপরাধিদের আইনের আওতায় আনা হবে। এব্যাপারে আহাদ মাস্টার জানায়, হোটেলে কি হয় বা না হয় সব খবর তার জানা নেই। তার পূত্র বেলাল জানায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই সব কিছু চলে, লিখে কোন লাভ নাই, সেও ডেসটিনির সাংবাদিক।
Leave a Reply