রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল ছাত্র রাজনীতির ধারক বাহক হলো বরিশালের শীর্ষস্থানীয় ৫ কলেজ। কিন্তু ৫ কলেজের ছাত্রলীগের কোন কমিটি না থাকায় ছাত্র রাজনীতিতে ভাটা পরেছে। নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে বরিশালের কলেজ ছাত্রলীগ। ফলে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
২০০৪ সাল থেকে চলছে নগরীর ঐতিহ্যবাহী বিএম কলেজ, হাতেম আলী কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বহীন কার্যক্রম। এছাড়া বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল সরকারি কলেজেও নেই ছাত্রলীগের কোন কমিটি।
ফলে নেতৃত্বহীন ছাত্রলীগ কর্মীরা পাচ্ছে না কোন দিক। তবে কলেজ ছাত্রলীগকর্মীরা বলছে, নগরীর এসব কলেজগুলোতে মহানগর ছাত্রলীগ কমিটি গঠনের নেতৃত্ব দেবেন কিভাবে তারাও মেয়াদাত্তীর্ণ কমিটি। কলেজ ছাত্রলীগ কর্মীরা মহানগর কমিটিকে দায়ী করেন।
দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপিঠ পাশ্চত্যের অক্সফোর্ড খ্যাত সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে সর্বশেষ ২০০৪ সালে ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটিতে গাজী সুভকে আহবায়ক ও মঈন তুষার, সুভ সেন, নাহিদ সেরনিয়াবাত, মলি, রফিক সেরনিয়াবাত ও মাকসুদ আলমকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়। সেই আহবায়ক কমিটি আজ পর্যন্ত চলে আসছে। গঠন করা হয়নি কমিটি।
ফলে ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের ছাত্র রাজনীতিতে ভাটা পরে যায়। কোন নেতৃত্ব না থাকায় দিন দিন কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে কলেজ ছাত্রলীগ। ওই আহবায়ক কমিটির রফিক সেরনিয়াবাত, মলি সহ অনেকেই চাকুরীজীবী হয়ে গেছেন। সবাই সংসার জীবন নিয়ে ব্যস্ত।
বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ ২০০৪ সালে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে আব্দুর রাজ্জাককে সভাপতি, ওহিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ও রেজাউল করিম রেজাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। সেই থেকে চলে আসছে কমিটিটি। ফলে ছাত্র রাজনীতি থমকে গেছে কলেজ থেকে।
প্রায় ১৪ বছর ধরে চলে আসা এই কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক কে পরবর্তীতে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তখন থেকে মেরুদন্ড বিহীন কমিটি চলছে পলিটেকনিকে। পাশাপাশি রেজাউল করিম রেজা প্রতিপক্ষের আঘাতে খুন হয়। ফলে সংগঠনটির কার্যক্রমে ভাটা পরে যায়।
সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজেও ২০০৪ সালে কমিটি গঠন করা হয়। রেজাউল করিম বাপ্পিকে সভাপতি, সুমন সেরনিয়াবাতকে সাধারণ সম্পাদক ও বাবুল জমাদ্দারকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। পরে সুমন সেরনিয়াবাতকে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হলে ঢাল বিহীন তলোয়ারে পরিণত হয় ছাত্রলীগের কার্যক্রম।
রেজাউল করিম বাপ্পিকে পুলিশ গ্রেফতার করলে হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ হাতেম আলী কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করে দেন।
বরিশাল সরকারি কলেজ ছাত্র রাজনীতিতে অনন্য একটি নাম। কিন্তু দিন দিন কার্য ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে দলটি। কমিটি না থাকার কারণে ছাত্রলীগ কর্মীরা পাচ্ছে না কোন কুল কিনারা।
২০১৩ সালে মামুনকে সভাপতি এবং মাসুমকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। অসদাচরণের দায়ে মামুন কলেজ থেকে ছাত্রত্ব হারান এবং কমিটিকে বিলুপ্ত করেন মহানগর ছাত্রলীগ।
দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র মেডিকেল কলেজ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবামেক)। ঐতিহ্যবাহী কলেজটিতে ২০১৫ সালে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়।
ইমরানকে সভাপতি, তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক, সাজিদুল ইসলামকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, সরিফুল ইসলাম সুভকে সহ-সভাপতি, সুজন, কামাল আশিক কে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ।
এদের মধ্যে অনেকেরই ছাত্রত্ব নেই। আবার কেউ বিবাহ করে সংসার জীবন শুরু করেছে। তাছাড়া ওই কমিটি অনেকেই রয়েছেন বরিশালের বাইরে।
২০১৬ সালে শেবামেক এর ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাও এখন নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে। দ্রুত কমিটি শেবামেক ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের দাবী জানিয়েছেন কর্মীরা।
এ ব্যাপারে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে রেখে নগরীর কলেজ, থানা এবং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে।
Leave a Reply