সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশালে স্কুল শিক্ষিকার স্বর্ণালংকার নিয়ে পালাবার সময় গণধোলাই’র শিকার হয়েছে প্রতারক চক্রের তিন সদস্য। পরে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া স্বর্ণালংকার সহ তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। অবশ্য ধরা পড়ার আগেই চক্রের আরো কয়েকজন সদস্য কৌশলে পালিয়ে গেছে। সোমবার (০৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কাউনিয়া থানাধীন বেলতলা এলাকায় ইসলামিয়া কলেজ সংলগ্নে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকে এক নারী ও ৫/৬ জন পুরুষ লোক আমানতগঞ্জ মাহমুদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তানিয়া আক্তারকে স্কুলের সামনে লম্বা পাঞ্জাবী, মাথায় টুপি, মুখভরা দাড়িওয়ালা, মুখ ঢাকা ব্যক্তি তাকে সালাম দেয়।
পরে তাদের মধ্যে কথোপকথনের এক পর্যায় রুষ লোকটি হঠাৎ করেই কথার ছলে শিক্ষিকার হাত চেপে ধরে একটি লাল রং এর পাথরগুজে দিয়ে শিক্ষিকার গলার চেইন, কানের বালা ও হাতের আংটি খুলে দিতে বলে। এসময় শিক্ষক নিস্তব্দ হয়ে নিজ হাতেই পড়নে থাকা স্বর্ণালংকার খুলে তাদের হাতে দিয়ে দেয়।
তবে ওই প্রতারকরা যখন স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় স্মৃতি ফিরে আসলে শিক্ষক ডাক-চিৎকার শুরু করে। এসময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে আমানতগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের সামনে একটি অটোরিক্সা থেকে তিন প্রতারককে আটক করে। তাদের বেলতলা এলাকায় নিয়ে গণধোলাই দেয়। পরে তাদের কাছ থেকে একটি স্বর্ণের চেইন উদ্ধার ও কানের দুল উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে কাউনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আহসান উল্যাহ’র নেতৃত্বাধিন একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন প্রতারককে নিজেদের জিম্মায় নেয়। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত স্বর্ণালংকারও নিজের কাছে নিয়ে নেন। তবে ঘটনাস্থলে প্রতারক চক্রের নাম পরিচয় এবং জব্দকৃত স্বর্ণের ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন এসআই আহসান উল্যান।
এদিকে দিনভর ঘটনাটি লুকোচুরি করে কাউনিয়া থানা পুলিশ। তাদের দাবী ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চেষ্টা করেও আটককৃতদের নাম পরিচয় বের করতে পারেনি তারা। আটককৃতরা নিজেদের নাম পরিচয় উল্টা পাল্টা বলছে বলে দাবী করেন এসআই আহসান উল্যাহ। তিনি বলেন, এরা বরিশালের নয়। দুর থেকে এসেছে প্রতারনা করার জন্য। তাদের কাছ থেকে তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে স্বর্ণালংকার জব্দ’র বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে এসআই আহসান উল্যাহ বলেন, প্রতারকদের কাছ থেকে কোন স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়নি। তবে সাংবাদিকদের সামনে স্বর্ণালংকার জব্দের বিষয়টি এড়িয়ে যাবার কারণ জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। বলেন, তথ্য চক্রের সাথে জড়িত এবং মুল হোতাদের খুঁজে বের করতে চেষ্টা চলছে।
বক্তব্য জানতে কাউনিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম কবির বলেন, ঘটনার সময় একটি স্বর্ণের চেইন জব্দ হয়েছে এটা আমরা সাবাই জানি। এটি এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। ওই চেইনটি হয়তো জব্দ করে আদালতে নয়তো বাদীর জিম্মায় দেয়া হবে। তাছাড়া এই ঘটনায় নিয়মিত মামলা হবে বলেও জানিয়েছেন পরিদর্শক গোলাম কবির।
Leave a Reply