রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:ঈদের পরের দিন থেকে বরিশালের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরণীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শুক্রবার (২৪ আগস্ট) এ ভিড় যেনো ছাপিয়ে গেছে বিগত সময়গুলোকেই।
বিকেল ৩টা থেকেই বরিশালের বান্দরোড়ে প্লানেটওয়ার্ল্ড, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, শিশুপার্ক, স্বাধীনতাপার্ক, কীর্তনখোলা নদীতীরের মুক্তিযোদ্ধাপার্ক, কেডিসি ও ত্রিশ গোডাউন এলাকার বিনোদনপ্রেমীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। যেখানে বয়োজেষ্ঠ্যদের থেকে তরুণ-তরুণী আর শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিই ছিল চোখে পড়ার মতো।
মুক্তিযোদ্ধা পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসা কলেজছাত্র হাসান বলেন, এইচএসসির পর স্কুলের বন্ধুরা যে যার মতো কলেজে ভর্তি হয়েছে। অনেকে আবার ঢাকায় ভর্তি হয়েছে। শুধু ঈদেই বরিশালে আসেন। তাই ঈদের পর আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়ানো শেষ করে আজ সব বন্ধু মিলে মুক্তিযোদ্ধাপার্কে এসেছি। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় কীর্তনখোলার বুকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য।
শুধু তরুণরাই নয়, পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, কেডিসি ও ত্রিশ গোডাউন এলাকা সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে। বরিশালের মানুষের কাছে এই নদীতে নৌকা কিংবা ট্রলার নিয়ে ঘুরে বেড়ানো বেশ কয়েকবছর ধরে জনপ্রিয়তা পায়।
এদিকে প্লানেট ওয়ার্ল্ডে ঘুরতে আসা সপ্তম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী রাইসা বলে, বাবা-মায়ের সঙ্গে আমি, আমার ছোট ভাই, মামাতো দুই বোন মিলে ঘুরতে এসেছি, কখনো দেলনায় উঠছি, ট্রেনে চড়ছি, আবার কখনো প্যাডেল বোটে করে পুকুরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বেশ মজা পাচ্ছি, বাবা-মা শুধু পাশে থেকে খেয়াল রাখছেন।
কর্মজীবী হেলালুজ্জামান বলেন, কর্মের কারণে সন্তানদের তো সারাবছর ঘুরতে বেড়ানো সম্ভব হয় না। তাই ঈদ-কোরবানি বা পূজা-পার্বনের ছুটিতে একটু ঘুরতে বের হই। বায়না ধরায় পার্কে নিয়ে এসেছি। ওরা বিভিন্ন রাইডে চড়ছে আর আমরা অভিভাবকরা শুধু খেয়াল রাখছি যাতে খারাপ কিছু না ঘটে। শিশু ও তরুণদের ভিড়ে বাচ্চারাও খেলা করে বেশ মজা পাচ্ছে।
নগরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোর বাইরে কীর্তনখোলা নদীর ওপরে নির্মিত শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু, খয়েরাবাদ নদীর ওপর খয়েরাবাদ সেতু, কালিজিরা ব্রিজ, দোয়ারিকা-শিকারপুরের ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু, মেজর এম এ জলিল সেতু, গুঠিয়ার দুর্গা সাগর, বায়তুল আমান জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে কোরবানির ঈদের ছুটিতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের পদচারণায় মুখরিত বিনোদনকেন্দ্রগুলো।
আবার বিনোদনকেন্দ্রগুলোকে ঘিরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বেচাবিক্রিও কয়েকগুনে বেড়েছে। পাঁচ থেকে ১০ টাকার মধ্যে মসলা দিয়ে বানানো আমড়া, পেয়ারা, ঝালমুড়ি, চানাচুর, বুট, বাদাম পেয়ে খালি মুখে কেউ আর দাঁড়িয়ে থাকছেন না। সুযোগ বুঝে শিশুদের হাতে বাঁশি, বেলুনসহ প্লাস্টিকের বিভিন্ন খেলনা ধরিয়ে দিচ্ছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বাধ্য হয়ে অভিভাবকরা তা শিশুদের কিনে দিচ্ছেন অনেকটা ইচ্ছের বিরুদ্ধে।
এদিকে নিরাপদে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের নজরদারি জোরাদার করেছে। আবার বখাটেসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনারোধে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে সাদা পোশাকধারী পুলিশও।
Leave a Reply