রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজকের ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে জনস্রোত। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে উদ্যান এলাকা, যারা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশে একত্রিত হয়েছেন।
বেলা ৩টার কর্মসূচি শুরুর বহু আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সমাবেশস্থল। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-বড় মিছিল এসে জমা হতে থাকে উদ্যানে। শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেতসহ আশপাশের সব পথেই দেখা যায় মিছিলের ঢল। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, মুখে প্রতিবাদী স্লোগান— যেন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে বাজছে গাজার আর্তনাদ।
সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা সকাল থেকেই সুশৃঙ্খলভাবে মানুষকে প্রবেশ করাতে এবং দিকনির্দেশনা দিতে কাজ করেছেন। সোহরাওয়ার্দীর প্রতিটি প্রবেশপথে তাদের তৎপরতা কর্মসূচির শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন টিএসসি এলাকা ও আশপাশে দেখা গেছে ব্যতিক্রমী দৃশ্য। স্থানীয় বিক্রেতারা জাতীয় পতাকার সঙ্গে বিক্রি করছেন ফিলিস্তিনের পতাকা, ব্যাজ ও ব্যানার। মানুষজন এই প্রতীকি উপকরণ ধারণ করে তাদের অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করছেন।
এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন বয়স, পেশা ও রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ। তাদের মতে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞ এক ধরণের গণহত্যা, যা মানবতাবিরোধী। অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ না খুলে থাকা এক ধরনের নৈতিক অপরাধ। তাই আজ তারা প্রতিবাদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়েছেন।
আয়োজকরা জানান, ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে জনমত গড়ে তোলাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে মানুষের মধ্যে মানবিক অনুভূতি ও সহানুভূতি জাগিয়ে তোলাও কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। তারা আশা করছেন, এমন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে গণচেতনার প্রসার ঘটবে।
বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে এই কর্মসূচি চলবে মাগরিবের নামাজ পর্যন্ত। পুরো সমাবেশজুড়ে শান্তিপূর্ণভাবে নানা বক্তৃতা, স্লোগান ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে গাজার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করা হচ্ছে।
জনতার বার্তা স্পষ্ট— ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোই এখন মানবতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আজ যেন হয়ে উঠেছে গাজাবাসীর জন্য বাংলাদেশের হৃদয়ের কণ্ঠস্বর।
Leave a Reply