রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও জনগণ ভোট ও ভাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অতীতের বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জনগণের মতপ্রকাশের সুযোগ সংকুচিত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঝালকাঠি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হন, যা গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। এছাড়া, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগেই রাতের বেলায় ফল নির্ধারণ করা হয়। তিনি বলেন, “পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির নেই যে, দিনের ভোট রাতে শেষ হয়ে যায়। বিদেশি কূটনীতিকরাও এই নির্বাচন নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।”
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়েও তিনি সমালোচনা করে বলেন, জনগণের অনীহার কারণে এটি ‘ডামি নির্বাচন’ হিসেবে পরিণত হয়। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন যে, তাদের ভোট ইতোমধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামের আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। ইসলামী মূল্যবোধ অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হলে জনগণের সব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট যারা মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল, তারা শেষ পর্যন্ত পালানোর সুযোগও পায়নি। ঝালকাঠি এখন ইসলামের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে ইসলামের জয়যাত্রা আরও সুসংহত হবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, অতীতের সরকারগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং দেশের জনগণকে দমন-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও সেই সরকার বেশিদিন টেকেনি। আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে সত্যিকার শান্তি ফিরে আসবে।”
তিনি জাতীয় সংসদে ইসলামি আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, “দেশের সংসদে ইসলামের আলোকবর্তিকা জ্বালাতে হবে। ইসলামি আদর্শে দেশ পরিচালিত হলে সব ধরনের জুলুম-অত্যাচার বন্ধ হবে এবং বাংলাদেশে সত্যিকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।”
সম্মেলনে জেলা জামায়াত আমীর অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুয়াযম হোসাইন হেলাল ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। এছাড়া, কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা ফকরুদ্দিন খান রাজি, মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার, লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও শেখ নিমুল করিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
২২ বছর পর প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত এই কর্মী সম্মেলনে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাজার হাজার নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
Leave a Reply