বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। অবাধ প্রজননের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে টানা ২২দিন সাগরে ইলিশ শিকার বন্ধ থাকার সময় শেষে গত ৩০অক্টোবর বুধবার মধ্যরাত থেকে উপকুলীয় পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বিভিন্ন নদী ও সাগর মোহনা থেকে পাঁচ শতাধিত ট্রলার বরফ ও জ্বালানি মজুদ করে স্বপ্ন,আশা ও ওয়াদা পুরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইলিশ শিকারে শতশত ট্রলারের সাগরে রওনা হয়েছে। এবার তাদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে এমন আশায় ট্রলারের মালিক ও জেলেদের মুখে ছিল হাসিক ঝিলিক।
দীর্ঘ দিন পর সাগর থেকে ইলিশ বোঝাই ট্রলার ফিরবে এ আশায় মহীপুর,আলীপুর ও বাবলাতলার ব্যবসায়ীরা মৎস্য আড়ৎ গুলো পরিস্কার করে গুছিয়ে অপেক্ষা প্রহন গুনছেন। বরফ কলগুলোতে দিন রাত সমানে বরফ উৎপাদন করা হচ্ছে। সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় জেলে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে, উপজেলার মৎস্য বন্দর আলীপুর,মহীপুর, লালুয়া, কুয়াকাটা, ধুলাসার, বাবলাতলার ঢোস, খাজুরা,ফাতরা, আন্দারমানিক ও রাবনাবাঁধ মোহনা, লালুয়া, গঙ্গামতি, ধানখালী, বাহের চর বাজার, খালখোড়া বাজার, চরমোন্তজ স্লুইজ বাজার ছোটবাইশদিয়ার কোড়ালিয়ার বাজার, বড়বাইশদিয়াচরগঙ্গার বাজার ওই সব এলায় বেশি ভাগ মানুষ জেলে। এ কাজ করে তারা জীর্বিকা নির্বাহ করেন।
কিন্তু নিষেধাঞ্জা বন্ধ থাকার সময় শেষে গত ৩০অক্টোবর বুধবার মধ্যরাত থেকে উপকুলী বিভিন্ন নদী ও সাগর মোহনা থেকে শতাধিত ট্রলার বরফ ও জ্বালানি মজুদ করে স্বপ্ন,আশা ও ওয়াদা পুরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইলিশ শিকারে ট্রলারের সাগরে যাত্রা করছে।
ধুলাসার ইউনিয়নের গঙামতি গ্রামের জেলে আলী হোসেন খাঁন বলেন, সাগরে যে কতবার জাল পাতছি,কিন্তু মাছ পাইনি। হগোল সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। মনডা কইতাছে এবার প্রচুর মাছ ধরতে পারমু। বাবলাতলা ঢোস গ্রামের মতিন ও কাওছার মাঝি বলেন,হাড়াডা সিজনে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনছি। ট্রলারের এক জেলে গত কয়ডা দিন সাগরে মাছ ধরতে না পেরে পোলামাইয়া লইয়া খাওয়া না খাইয়া দিন কাডাইছি।
এহন যদি আল্লায় মুখ তুলে চায়। এখানকার জেলেরা জানান, বুধবার রাত ও বৃহসপতিবার সকাল থেকে আলীপুর, মহীপুর, ঢোস. গঙামতিচর, কুয়াকাটা ফাতরা খাজুরা আন্ধারমানিক নদী ও রাবনাবাঁধ নদীর মোহনা থেকে শত শত ট্রলার মাছ শিকারে সাগরে ছুটে গেছে। সাগরের যাত্রারত হাজী আক্তার গাজী ট্রলারের মাঝি মো.জাহাঙ্গির জানান, প্রজননকালে সাগরে ইলিশ শিকার বন্ধের জন্য নেীবাহিনী ,কোস্টগার্ড,মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ যে ভাবে মা ইলিশ শিকারের অপরাধে জেলেদের জাল ও মাছ আটক করে শাস্তি দিয়েছে,। দীর্ঘ ২২দিন সমুদ্রে ইলিশ প্রজনন মওসুমে মাছ শিকার বন্ধ থাকর পর সাগরে যাত্রারত প্রতিটি ট্রলারের মালিক ও জেলেরা ছিলেন উৎফুল্ল।
কুয়াকাটার জেলে নুর ইসলাম বলেন, ‘সরকার ইলিশ ধরতে না করছে, তাই অন আমরা ইলিশ ধরি না। অন জালের দড়ি (রশি) বদলানো, ছেঁড়া জাল সেলাই (মেরামত) ও মাছ ধরার নৌকা ঠিক (সংস্কার) করি। আর ইলিশ আন্ডা (ডিম) না ছাড়লে, মাছ বাড়বো কইতোন। আর না বাড়লেতো নদীতে ইলিশ হাইয়াম (পাবো) না, তহন সংসার চালামু কেমনে আর মাহজনের ঋনের টিয়া (টাকা) দিয়াম কি কইরা।’ তাইত সরকারের উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে এখন ২২দিন অবরোধ শেষ হয়েছে তাই সাগরে ৩০অক্টোবর বুধবার মধ্যরাত নামবো।
কলাপাড়্ মৎস্য বন্দর আলীপুর মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, আলীপুর Ñমহীপুর ২৭টি বরফ কল রয়েছে কিন্তু ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকার কারনে বরফ কল মালিক দুই দিন আগ থেকে বরফ তৈরি সময় উচিত ছিল কারন বর্তমানে সব জায়গা বরফ সঙ্কট দেখা দিয়েছে সব ট্রলার সাগরে যাত্রা করতে এখনও দুই তিন সময় লাগবে। ইলিশ প্রজনন মওসুম শেষ হওয়ার তিন আগ থেকে ঝিমিয়ে পড়া অবতরণ কেন্দ্র ঘিরে কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। মাছ বহনসহ বরফ কল থেকে শুরু করে প্যাকিংয়ের শ্রমিকরা মহাব্যস্তসময় পার করছেন।
এ ব্যাপারে মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, নৌবাহিনী , কোস্টগার্ড, মৎস্য বিভাগ ও থানার পুলিশ ইলিশ প্রজনন মওসুমে মাছ শিকার বন্ধ সহায়তা করেছে। এছাড়া ১৯টি মোবাইল কোড ছিল। অভিযান করা হয়েছে ১৯ বার।ইলিশ আটক করা হয়েছে ১ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত সাগরে ইলিশ শিকার জাল পুরিয়ে ফেলা হয়েছে ৮৭হাজার মিটার যার মুল্য সতর লক্ষ টাকা। ইলিশ প্রজনন মওসুমে মাছ শিকার দায় ২ জনকে জেলে প্রেরন করা হয়েছে। সব ইলিশের পেটে ডিম আসছে কিনা তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রায় মা ইলিশ ডিম ছেড়ে দিয়েছে।
Leave a Reply