শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধি॥ মিজানুর রহমানের বয়স এখন চল্লিশের কোঠায়। জন্মগতভাবেই দু’পায়ে সমস্যা তার। বাড়িতে বাড়িতে কোরআন শরীফ পরিয়ে সেই রোজগারেই চলছিল সংসার। করোনা পরিস্থিতিতে সে পথটিও বন্ধ হয়ে গেছে তার। মিজানুর রহমানের পরিবার এখন খেয়ে না খেয়ে কোন রকম দিনাতিপাত করছে। শুধু মিজানুর রহমানই নয়, বর্তমানে তার মতো কর্মহীন হয়ে উপজেলার প্রায় শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবন পার করছেন।
মিজানুর রহমান পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মৃত আবদুল মন্নান কমান্ডারের ছেলে। বাবা নেই। বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে তার বসবাস। জন্মগত পঙ্গু হয়েও সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননা। হাঁটেন লাঠিতে ভর করে।
কিশোর বয়সেই কোরআনে হাফেজ হয়েছিলেন তিনি। তাই প্রায় দশ বছর আগে আয় রোজগারের কোন উপায় না পেয়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কোরআন শরীফ পড়িয়ে সংসারের ৫ সদস্যের ভরপোষণ বহন শুরু করেন তিনি। কোরআন শরীফ পরিয়ে যে আয় হতো তা দিয়ে কোন রকম চলত তার পরিবার। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবে কারো বাড়িতে কোরআন পড়াতে যেতে পারছেননা তিনি। ফলে আয় রোজ রোজগার বন্ধ হওয়ায় থমকে গেছে তার পরিবার।
মিজানুরের মতো উপজেলার নীলগঞ্জ, কুয়াকাটা, ডাবুলগঞ্জ, ধানখালী, চম্পাপুর ও টিয়াখালী ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক হত দরিদ্র পরিবার খাদ্য সংকটে ভুগছে। হতদরিদ্র এসব পরিবারে উপজেলা প্রশাসনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে যে সাহায্য প্রদান করা হয়েছে তা অনেক আগেই শেষ। এছাড়া মিজানুরের মতো অনেক পরিবার আছে যারা এখনও কোন সহযোগিতা পাননি। ফলে এসব পরিবার খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
হাফেজ মিজানুর রহমান জানান, এখন আর কারো বাড়িতে পড়াতে যেতে পারিনা। তাই আয় রোজগারও বন্ধ। আর আমাদের এখন পর্যন্ত কেউ কোন সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ জানান, নতুন করে সরকারি সহায়তা এলে হাফেজ মিজানুর রহমানকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সহযোগিতা করা হবে।
Leave a Reply