রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কলকাতায় অবস্থান নিয়ে দেশের রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তিনি বর্তমানে রাজারহাট নিউটাউনের ডিএলএফ নিউটাউন হাইটস প্লাজায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে আছেন স্ত্রীও।
এই তথ্য সামনে আসে ডিজিটাল গণমাধ্যমের সম্পাদক গাজী নাসির উদ্দীন আহমেদের একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। তিনি দাবি করেন, তার এক বন্ধু কলকাতায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট শ্যামাশীষ ব্যানার্জির চেম্বারে অপেক্ষারত অবস্থায় মাস্ক পরিহিত এক ব্যক্তিকে দেখতে পান, যিনি পরে নিজেকে ওবায়দুল কাদের বলে পরিচয় দেন।
এই ঘটনার পর থেকেই সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন এটি নিছক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সফর, আবার কেউ কেউ সন্দেহ করছেন এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারতের সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে সচেতন, তবে যদি কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত না থাকেন, তবে তাদের হয়রানি করা হয় না।
জানা গেছে, ডিএলএফ কমপ্লেক্সে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বসবাস করেন টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতার মতে, কাদের সাধারণত বাসাতেই থাকেন, খুব কমই বাইরে যান। মাঝে মাঝে চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল বা ডাক্তারের চেম্বারে যান, তবে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি দেখা-সাক্ষাৎ খুব একটা করেন না।
একাধিক সূত্র জানায়, কাদের মূলত নিজাম হাজারী ও ছোট মনিরের সঙ্গে সীমিতভাবে চলাফেরা করেন। এর বাইরে তিনি কোনো রাজনৈতিক বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ কয়েক মাস তিনি বাংলাদেশে অনুপস্থিত ছিলেন। ওই সময়ে তিনি প্রথমে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং যান, যেখানে তার সঙ্গে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আরও কয়েকজন নেতা। এরপর সেখান থেকে আসামের সীমান্ত অতিক্রম করে কলকাতায় পৌঁছান কাদের।
তার এই অবস্থান এবং বিদেশে প্রবাস জীবন কাটানোর ঘটনাটি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের গুঞ্জন জোরালো হয়েছে, তখন কাদেরের কলকাতায় অবস্থান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে এসেছে।
এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে দলের অভ্যন্তরে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও চিন্তা-ভাবনা চলছে বলেই জানা গেছে।
Leave a Reply