রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
আরিফ বিল্লাহ নাছিম, কলাপড়া (কুয়াকাটা) প্রতিনিধি: প্রজনন মৌসুমের টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীর রূপালী ইলিশে ভরে গেছে মৎস্য বন্দর মহীপুর-আলীপুর। মহিপুর পাইকারী বাজারে ইলিশ কিনতে আসা অনেক ক্রেতারা জানালেন, প্রত্যেকটি ইলিশ মাছে ডিম রয়েছে। তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়টা আর একটু পিছিয়ে আনা হলে এ বিপুল সংখ্যক মা -ইলিশ ডিম ছাড়তে পারতো।
ইলিশের আমদানি বাড়ার সাথে সাথে ঝিমিয়ে পড়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রকে ঘিরে কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। মাছ বহনসহ বরফ কল থেকে শুরু করে প্যাকিংয়ের শ্রমিকরা কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন। ইলিশের আমদানি বাড়ার কারণে দরও অনেকটা নিন্মমুখী রয়েছে বলে দাবী করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। মাছ আর মানুষের ভীড়ে মৎস্য বন্দর মহিপুর পা রাখাটাই দ্বায় হলেও মঙ্গলবার দুপুরে মহিপুর-আলীপুর মৎস্য কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে মোকামেই এসেছে প্রচুর ইলিশ। পাইকারী ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাদের ভীড় ছিলো চোখে পরার মতো। মহিপুর-আলীপুর সংলগ্ন খালে ছোট বড় ট্রলার-নৌকা স্থানীয় নদী থেকে মাছ আনা হচ্ছে মোকামে। তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়টা আর একটু পিছিয়ে আনা হলে এ বিপুল সংখ্যক মা -ইলিশ ডিম ছাড়তে পারতো। মা-ইলিশের পাশাপাশি জাটকা ইলিশের দেখাও মিলেছে বাজারে। ২০০৮ সাল থেকে সরকারের ইলিশ সংরক্ষন পদ্ধতি এবং নিষেধাজ্ঞার কারনে সাগর ও নদ-নদীতে ইলিশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন প্রতিবছরই বড় বড় সাইজের ইলিশ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
তবে অনেক ইলিশের পেটে এখনও ডিম রয়েছে বলে দাবী করেছেন ব্যবসায়ীরা। মাছগুলো পাইকারী দামে ক্রয় করে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রয়কৃত ইলিশ মোকামে বরফ দিয়ে প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন যানবাহনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিস্ট আড়ৎ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার পাইকারী বাজারে প্রতি মন এলসি সাইজ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায়, এলসির নীচের সাইজের ইলিশ (ভ্যালকা) বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকায় এবং এর নীচের সাইজ গোটলা বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় দরে প্রতি মন বিক্রি হয়েছে। আলীপুর মৎস্য বন্দর শ্রমিক মফিজ হাওলাদর জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর প্রথমদিনেই যে মাছের চাঁপ বেড়েছে তা সকলের মুখে হাসি এনে দিয়েছে। ঝিমিয়ে থাকা আলীপুর মৎস্য বন্দর বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্যতা। এরকম চাঁপ আরও কয়েক দিন থাকবে বলেও জানান তিনি। আড়তদার পিন্টু ভদ্র জানান, সোমবার বিকেল পর্যন্ত মহিপুর অবতরণ কেন্দ্রে আনুমানিক কয়েক শত মন ইলিশ এসেছে। আমদানি বেশি থাকায় দামও কিছুটা কম। ইলিশের চাঁপ এরকম আরও ২/১ দিন থাকবে, তবে ১ নভেম্বর থেকে ঝাটকা নিধন বন্ধের কর্মসূচী শুরু হওয়ার পর ইলিশের চাঁপ কমে যাবে। অনেক ট্রলার মালিকের অভিযোগ, মাছের দাম কম থাকলেও আমদানি বেশি হওয়ায় বরফের দাম বেড়েছে। ২৫ থেকে ৩০ টাকার একঝুড়ি ভাঙ্গা বরফ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে অর্থাৎ এক পিস আড়াইশত টাকার বরফ তিন শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোমবার দিনে পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে মাছ পাঠানো সম্ভব হয়নি, তবে রাতে ট্রাক বোঝাই করে মাছগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হবে।
কলাপাড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মো.মোসলেম উদ্দিন বলেন, মা ইলিশ ডিম দেওয়ার কারনে মাছ এখন চিকন হয়ে গেছে । শতকরা ৯০ ভাগ মা ইলিশ ডিম ছেড়ে দিয়েছে।
Leave a Reply