মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি চাওয়া হলে বলেন, ‘আমি কী অপরাধ করলাম!’ সোমবার বিকালে ঢাকার হাকিম আদালতে তিন মামলার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এমনটা বলেন। পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী নরসিংদী এলাকায় ‘অস্ত্র ও মাদকের কারবার, চাঁদাবাজি, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণাসহ বিভিন্নভাবে মানুষের অর্থ আত্মসাত করে’ বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে র্যাবের অভিযোগ।
জাল নোট এবং অবৈধ অস্ত্র ও বিদেশি মদ রাখার তিন মামলায় তাদের দুজনকে মোট ১৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন ঢাকার দুজন মহানগর হাকিম। এর মাঝে বিচারক পরিবর্তনের ফাঁকে এক আইনজীবীকে তিনি বললেন, আমার লাইফটাই শেষ হয়ে গেল!
শনিবার ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় র্যাব-১ কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বিমানবন্দর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
আর ওয়েস্টিন হোটেলে পাপিয়ার নামে ভাড়া করা ‘প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট’ এবং ইন্দিরা রোডে ওই দম্পতির দুটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পিস্তল, গুলি, মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, উদ্ধারের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা হয় অন্য দুটি মামলা।
বেলা ৩টা ২৯ মিনিটে প্রথমে পুরুষ আসামিদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। নারী পুলিশ সদস্যরা পাপিয়াসহ দুই নারী আসামিকে কাঠগড়ায় না নিয়ে আইনজীবীদের বেঞ্চে বসানোর চেষ্টা করেন। তবে উপস্থিত আইনজীবীদের চাপে শেষ পর্যন্ত পাপিয়াকেও কাঠগড়ায় তোলা হয়।
জাল নোটের মামলায় রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে পাপিয়ার আইনজীবী আতিকুর রহমান বলেন, তাদের গ্রেপ্তার করার পর ৪৮ ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এই ঘটনা আসলে নাটকের মহড়ামাত্র।
আসামিপক্ষের অন্য একজন আইনজীবী বলেন, পাপিয়ার স্বামী মফিজুর ওরফে সুমন চৌধুরী ছাত্রলীগের নেতা, এলাকায় নির্বাচন করতে চাওয়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই নাটক সাজিয়েছে।
পাপিয়ার আরেকজন আইনজীবী বলেন, মিডিয়া অলরেডি বিচার করে ফেলেছে। আর কী বিচার করবেন? রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল এর উত্তরে বলেন, তাহলে মিডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করুন।
এ মামলার শুনানি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের আইনজীবীরা জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ড নিয়ে আপিল বিভাগের নির্দেশনার বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন। পাপিয়াকে এ সময় স্বামীর কাছ থেকে সেই ব্যাখ্যা শুনতে দেখা যায়।
একজন আইনজীবী কাঠগড়ার সামনে এসে পাপিয়া এবং তার স্বামীকে বলেন, আপনারা যদি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, তাহলে পুলিশের শেখানো কোনো কিছু বলবেন না। এ সময় পাপিয়াকে হতাশা প্রকাশে করে বলতে শোনা যায়, আমি কী অপরাধ করলাম!
সূত্র: বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম।
Leave a Reply