আমতলীতে তরমুজ পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০১ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




আমতলীতে তরমুজ পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

আমতলীতে তরমুজ পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

আমতলীতে তরমুজ পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক




আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলী উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চারগুণ বেশী দামে বাজারে তরমুজ বিক্রি হওয়ায় কৃষকদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে তেমনি করোনার কারণে বিধিনিষেধে তরমুজ পরিবহন নিয়েও তারা দুশ্চিতায় পড়েছেন।

 

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলীতে ১ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল। ওই লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গত বছর তরমুজ চাষ হয়েছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৪৯০ হেক্টর জমিতে তারমুজ চাষ বেশী হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিগত কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষিদের লোকসান গুনতে হয়েছে। ফলে তরমুজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল এ উপজেলার কৃষকরা।

 

 

কৃষি বিভাগ প্রতি হেক্টরে ৪০-৪৫ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। তরমুজ চাষের আদর্শ জমি বেলে-দোআঁশ মাটি। এ উপজেলার জমিগুলো বেলে-দোআঁশ মাটি হওয়ায় রসালো তরমুজের চাষ এখানে ভালো হয়। তরমুজ চাষিরা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুসারে পলি ব্যাগে চারা উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করে তরমুজ চাষ করেছেন।

 

এ ছাড়া মাঘ মাসের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময়। চাষের দুই মাসের মধ্যে গাছে তরমুজের ফলন ধরে। পুরো চৈত্র মাস জুড়ে তরমুজের ভরা মৌসুম। তবে বৈশাখ মাসের প্রথম দিকেও বাজারে তরমুজ পাওয়া যায়। ভরা মৌসুম হওয়ায় বর্তমানে তরমুজের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও শ্রমিকরা।

 

 

উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হয়ে থাকে আঠারোগাছিয়া, কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নে। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু চাষি তাদের উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করে দিলেও আবার অনেক চাষি আরো বেশী দাম পাওয়ার আশায় এখনো তরমুজ বিক্রি না করে বসে আছেন। বিভিন্ন ক্ষেতে প্রকারভেদে জাম্বু জাগুয়ার, সুগার বেবী, ডায়মন্ড, বিগ ফ্যামিলি ও সুইট ড্রাগন জাতের তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এসব তরমুজ স্বাদে অতুলনীয়।

 

 

অপরদিকে আমতলীর বেশ কয়েটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রকারভেদে একটি ছোট সাইজের তরমুজ ৮০ থেকে ১০০, মাঝারী সাইজের তরমুজ ২০০ থেকে ৩০০ এবং বড় সাইজের তরমুজ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় চারগুণ বেশী বলে জানায় একাধিক তরমুজ ব্যবসায়ীরা। চাষিদের উৎপাদিত তরমুজ স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, গাজীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা, গাইবান্দা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্যবাহী ট্রাক ও কার্গোতে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। এখন আবার মহামারী করোনার কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনে তরমুজ পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। সড়ক ও নৌপথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। তারা তাদের উৎপাদিত তরমুজ পরিবহনের জন্য সড়ক ও নৌপথে পণ্যবাহী যান চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান।

 

 

উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গাজীপুর গ্রামের সুলতান মৃধা বলেন, আমি ১০ একর জমিতে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তরমুজ চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর খরচ একটু বেশী হয়েছে।

 

 

তিনি আরো বলেন, এখনও সকল তরমুজ বিক্রি করতে পারিনি। গত বছরের তুলনায় বাজারে দাম অনেক ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় চারগুণ লাভবান হবো বলে আশা করি।

 

 

হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর রাওঘা গ্রামের তরমুজ চাষি তোফাজ্জেল হোসেন মীর বলেন, আমি ১২ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে তরমুজের দাম ভালো থাকায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। দাম ভালো থাকায় এ এলাকার কৃষকরা কয়েক বছরের লোকসান কাটিয়ে লাভবান হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

 

কুকুয়া ইউনিয়নের খাকদান গ্রামের তরমুজ চাষি ফারুক বিশ্বাস বলেন, আমি ৬ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। একটু বেশী দাম পাওয়ার আশায় এখনো ক্ষেতের উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করিনি। করোনার কারণে এখন সরকার লকডাউন দিয়েছে তাই আমিসহ অনেক চাষি তাদের উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা নিয়ে দুশ্চিতায় আছি।

 

 

আমতলী পৌর শহরের কাঁচামাল (তরমুজ) ব্যবসায়ী ফরিদ মিয়া বলেন, আমতলীতে তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে তরমুজের দাম প্রায় চারগুণ বেশী। লকডাউনে তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি নিয়ে বিপাকে আছেন।

 

 

উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত কয়েক বছর তরমুজ চাষিদের বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয়েছে। এ কারণে তরমুজ চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর চাষিরা বেশী জমিতে তরমুজ চাষ করেছে। এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা বিগত কয়েক বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারছে।

 

 

তিনি আরো বলেন, লকডাউনের মধ্যেও যাতে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করতে পরিবহন সুবিধা পায় তার জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD