সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের তাণ্ডবে নিহত উপকূলবাসীর স্মরণে সোমবার সন্ধ্যায় কলাপাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমরা কলাপাড়াবাসী আয়োজিত এই কর্মসূচি প্রায় এক ঘন্টাব্যাপী চলে। এতে শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অংশগ্রহণ করেন এবং নিহতদের সম্মানে নীরবতা পালন করেন।
১৯৭০ সালের এই দিনে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের ফলে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সেই স্মৃতি আজও উপকূলবাসীর হৃদয়ে গভীর দাগ রেখে গেছে। বিশেষত কলাপাড়া, টুংগী, কুয়াকাটা ও অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ আজও এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষতির শিকার। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাদের স্মরণে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, আমরা কলাপাড়াবাসীর সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, “১৯৭০ সালের দুর্যোগের স্মৃতি আমাদের জীবনে এক অবিনশ্বর ক্ষত। তবে এই দিবসটি শুধুমাত্র স্মরণে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং এটি উপকূলবাসীর অধিকার ও উন্নয়নের এক নতুন অগ্রযাত্রার সূচনা হতে পারে।” তারা দিনটিকে উপকূল দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
এছাড়া বক্তারা উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনেরও দাবি জানান। তাদের মতে, “উপকূলবাসীর জন্য উপকূল বিষয়ক একটি মন্ত্রণালয় গঠন করা হলে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা, কৃষি ও মৎস্যসম্পদের উন্নয়ন, এবং সার্বিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আরও কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে।”
আমরা কলাপাড়াবাসীর সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, “এটি শুধু নিহতদের স্মরণ নয়, এটি উপকূলীয় জনগণের জন্য ন্যায্য অধিকার এবং উন্নতির দাবি। উপকূলবাসীর জীবনযাত্রা উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব আরও বাড়ানো উচিত।”
এই কর্মসূচির মাধ্যমে কলাপাড়ার মানুষের মধ্যে একতাবদ্ধতা ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এটি চিহ্নিত হতে চলেছে। স্থানীয়দের মতে, উপকূলবাসীর নিরাপত্তা, অধিকার এবং উন্নয়নের জন্য সরকারের উচিত আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।
কর্মসূচির শেষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন শেষে বক্তারা একমত হয়ে বলেন, “এদিনটি উপকূলবাসীর সংগ্রামের দিন হিসেবে চিহ্নিত থাকবে, এবং আমরা আশাবাদী যে আগামীতে উপকূলের জনগণের জন্য আরও সমৃদ্ধ ও নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত হবে।”
Leave a Reply