স্কুলও কি নিরাপদ নয়? Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




স্কুলও কি নিরাপদ নয়?

স্কুলও কি নিরাপদ নয়?




পরিবারের পরই শিশুদের নিরাপদ স্থান হওয়ার কথা বিদ্যালয়। যেখানে সে পারিপার্শ্বিক বিষয়ে জানবে, শিক্ষা লাভ করবে। শিখবে মানবতাও। কিন্তু জীবনকে বুঝে ওঠার আগেই সেই বিদ্যালয়েই যদি তাকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়, তাহলে তার থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে? আর এসব ঘটনার পর সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে একজন অভিভাবকই বা কতটুকু স্বস্তিবোধ করবেন? এমনই ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ীতে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বার্থা খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাস এবং জেলা প্রাথমকি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও রাজবাড়ী পিটিআইয়ের পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়াসহ যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বার্থা খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাস চলতি মাসের ৯ জুলাই সোমবার তার বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয়াসহ যৌন হয়রানি করেন। পরে ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক এসে প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাসকে অবরুদ্ধ করে। পরে সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তপূর্বক আগামী দশ দিনের মধ্যে ওই শিক্ষককে প্রত্যাহার করবে এমন আশ্বাস দিয়ে অসীমকে মুক্ত করেন।

অপরদিকে জেলা প্রাথমকি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও রাজবাড়ী পিটিআইয়ের পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান মোল্লা চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন। পরে যৌন হয়রানীকারী ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদান না করে সুকৌশলে তার ভাইকে দিয়ে ১৫ দিনের মেডিকেল ছুটির আবেদন পাঠিয়ে দেন পিটিআই সুপারিনটেনডেন্টের কাছে। অজ্ঞাত কারণে সুপারিনটেনডেন্ট নাছির উদ্দিন ওই ছুটির অনুমোদনও করেন। সে ছুটির মেয়াদ ছিলো ৩ জুলাই পর্যন্ত। যার পর দিন ৪ জুলাই শিক্ষক নেতা হাবিব পুনরায় দেড় মাসের ছুটির আবেদন করেন এবং যার মেয়াদ শেষ হবে ১৯ আগস্ট। এই ছুটির আবেদনও মঞ্জুর করেছেন পিটিআই-এর সুপারিনটেনডেন্ট নাছির উদ্দিন। কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়াচরের হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সার্টিফিকেট দিয়ে এ ছুটির আবেদন করেন।

পিটিআই পরীক্ষন বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী বেশ কিছুদিন স্কুলে না আসায় তিনি ওই ছাত্রীর পরিবারকে ফোন করেন। তখন ওই ছাত্রীর পরিবার বলেন স্কুলে পড়াশোনার কোনো পরিবেশ নেই এবং হাবিবুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন।

সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি প্রাথমকি ও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, কিছু কিছু শিক্ষকের কারণে আজ শিক্ষাঙ্গনসহ তাদের শিক্ষকদের সন্মানহানী হচ্ছে। এতে করে প্রভাব পড়ছে পড়াশোনার ওপর। তাই অসীম কুমার দাসের বিষয়ে তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

রাজবাড়ী প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেনডেন্ট মো. নাছির উদ্দিন জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন, আর ঘটনাটি তিনি যোগদানের পূর্বে ঘটেছে। পূর্বের কর্মকর্তা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি সেটা জেলা প্রাথমকি অধিদফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এর বাইরে তার করার কিছুই নেই। পরবর্তী কোনো নির্দেশনা এলে সেটি তিনি দেখবেন। আর হাবিব রহমান মোল্লার ছুটির বিষয়েও তিনি কিছু জানেন না।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি অ্যাড. এমএ খালেক জানান, সদর উপজেলায় যে ১৩৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে তিনি সেগুলো মাঝে মধ্যেই পরিদর্শন করেন। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক দ্বারা ছাত্রীদের যে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে, সেটি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। ইতোমধ্যে শিক্ষক সমিতির নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লাকে ওই অভিযোগে উপজেলা শিক্ষা কমিটি থেকে শোকজ করা হয়েছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাকে পিটিআই থেকে প্রত্যাহার করলে শিক্ষা কমিটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

এছাড়া সম্প্রতি বার্থা খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাসের বিরুদ্ধে যে যৌন হয়ানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা কমিটি তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাথমকি শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন্দ্রনাথ সরকার জানান, বার্থা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ পাননি। ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষক নেতা যেহেতু পিটিআইতে কর্মরত আছেন, এ বিষয়ে পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে একাধিবার শিক্ষক নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লা এবং বার্থা খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাস ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD