শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৯ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক// বরিশালের বাকেরগঞ্জে ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে অসদাচরণ করায় সহকারি লাইব্রেরিয়ানকে লাঠিপেটা করলেন ওই ছাত্রীর মা। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের নিকট ন্যায় বিচার ও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে তাদের সহায়তা কামনা করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কালিগঞ্জ ছোফরোননেছা বালিকা বিদ্যালয়ে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ভরপাশা গ্রামের মাঝি বাড়ির ওই ছাত্রী ৭ম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। বিগত কয়েক মাস যাবত বিদ্যালয়ের সহকারি লাইব্রেরিয়ান মারুফ মোর্শেদ ওই ছাত্রীর দিকে কুনজরে তাকায় এবং ক্লাস করানোর সময় প্রায়ই তার গায়ে হাত দেয়। বিষয়টি ছাত্রী তার মাকে জানালে তিনি বিদ্যালয়ে মারুফকে শোধরাতে পরামর্শ দেয়।
এ ঘটনায় সহকারি লাইব্রেরিয়ান মারুফ ওই ছাত্রীর উপর আক্রোশ পোষন করিতে থাকেন। চলতি বছরের জুন মাসের শেষ দিকে ছাত্রীর মা বিদ্যালয়ে মেয়ের সাথে দেখা করে ভুলে একটি মোবাইল ফোন রেখে আসেন।
পরে ওই ছাত্রীকে ফোনটি তার স্কুল ব্যাগে রাখলে অপর এক ছাত্রী বিষয়টি শিক্ষক দাবীদার মারুফকে জানালে তিনি গিয়ে মোবাইল ফোনটি নিয়ে ওই ছাত্রীকে গালাগাল ও বিদ্যালয় থেকে বের করার হুমকি দেয়। ঘটনার পরদিন ছাত্রীর মা বিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি প্রধান শিক্ষকে জানালে তিনিও মারুফের পক্ষাবলম্বন করেন। এর একদিন পরে ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে গেলে সহপাঠীদের সামনে মারুফ তাকে গালাগাল করে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। ছাত্রীর মা কোন উপায় না পেয়ে বিদ্যালয় থেকে টিসি নিয়ে ওই ছাত্রীকে রহমগঞ্জ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন।
গত এক সপ্তাহ আগে শিক্ষকের দাবীদার লাইব্রেরিয়ান মারুফ ভরপাশা গ্রামের ওই ছাত্রীর বাড়ির সামনে দিয়ে মোটর সাইকেলযোগে যাবার পথে তার মা মারুফকে লাঠি দিয়ে বেধরক পিটায়। স্থানীয়রা এসে তাকে রক্ষা করে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই ছাত্রীর মা মারুফকে লাঠিপেটার কথা স্বীকার করে জানায়, মারুফ মোর্শেদ একজন খারাপ চরিত্রের লোক। সে তার মেয়েকে একাধিকবার গায়ে হাত দিয়ে লাঞ্চিত করেছে। তার মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি লজ্জায় এ বিষয়গুলো কাউকেই জানাননি।
তাছাড়া মারুফ ক্লাস করানোর অজহাতে বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীর গায়েই হাত দেয়। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের নিকট জোর অনুরোধ জানান। অভিযুক্ত সহকারি লাইব্রেরিয়ান মারুফ জানান, ওই ছাত্রী বিবাহিত এবং বিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে আসায় কর্তৃপক্ষ তাকে বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়েছে। তিনি ছাত্রীর মায়ের হাতে লাঠিপেটার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জানান, ওই ছাত্রী মোবাইল ফোন দিয়ে ক্লাসে এসেছিলো। তাছাড়া তিনি যখন জানতে পারেন ছাত্রী বিবাহিত তাই তাকে টিসি দিয়েছেন। মারুফের ব্যাপারেও ওই ছাত্রীর মা একবার অভিযোগ দেয় বলেও তিনি জানান। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে টিসি দেয়ার বিষয়টি তিনি জানেননা। তবে ওই ছাত্রী ফোন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক তাকে জানিয়ে ছিলো।
বিদ্যালয়ের সহকারি লাইব্রেরিয়ান মারুফকে ছাত্রীর মা লাঠিপেটা করার বিষয়টি তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছেন বলেও জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি এ বিষয়ে আগে কিছুই জানতেন না। একজন ছাত্রী বিবাহিত হলেই তাকে বিদ্যালয় থেকে টিসি দিতে হবে সরকারি বিধিতে এমন কোন নিয়ম নেই। তিনি তদন্ত করে অভিযুক্ত সহকারি লাইব্রেরিয়ান মারুফ মোর্শেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও জানান।
Leave a Reply