সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এস এম ইমামুল হকের সভাপতিত্বে ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে গত সোমবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তার পদোন্নতি পুনর্বহাল রাখা হলেও এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি ড. এ কে এম মাহাবুব হাসান।
ড. হাসান বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আর ওই চার কর্মকর্তার যোগদানপত্র না নেয়ার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া শেষ সিন্ডিকেট সভায় তাদের পদোন্নতি বহাল রাখা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যদি বহাল রাখা হয়, তাহলে তারা যোগদানপত্র দাখিল করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়মানুযায়ী কাজ করবে।’
তবে সব নিয়ম-কানুন মেনে পদোন্নতি পেলেও যোগদানে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এই চার কর্মকর্তা। যোগদান করতে না দেয়ায় ভারপ্রাপ্ত ভিসির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ছুটিতে চলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম ইমামুল হক। ছুটিতে থাকা অবস্থাতেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমানকে একই শাখার উপ-পরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব, একই শাখার উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবীরকে পরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব, অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার বাহাদুরকে একই শাখার পরিচালক পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনকে ডেপুটি চিফ প্রকৌশলী পদে চলতি দায়িত্ব প্রদানের মর্মে নিয়োগপত্র অর্থাৎ তাদের পদোন্নতি দেন।
পদোন্নতিপত্র পেয়ে চার জনই গত ১২ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর যোগদানপত্র দাখিল করেন। এরপর দীর্ঘ যাচাই বাছাই শেষে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা ভঙ্গসহ একাধিক নিয়ম লঙ্ঘনের কারণ উল্লেখ করে ওই চার কর্মকর্তার যোগদানপত্র গ্রহণ ও কার্যকর করা হয়নি বলে গত ২৩ মে সহকারী রেজিস্ট্রার সোলাইমান খান স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত স্মারক স্ব-স্ব কর্মকর্তার নিকট পৌঁছে দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার উপ-পরিচালক থেকে পরিচালক পদের চলতি দায়িত্ব পদে পদোন্নতি পাওয়া হুমায়ন কবির জানান, আমরা পদোন্নতি পাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত ভিসি মহোদয়ের কাছে যোগদানপত্র দিয়েছি, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে ডেপুটি চীফ প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পাওয়া মুরশীদ আবেদীন বলেন, অফিসের কিছু কুচক্রী মহলের বাধার কারণে ভারপ্রাপ্ত ভিসি আমাদের যোগদানপত্র গ্রহণ করছেন না। আমাদের যোগদানপত্র না নেয়ার যে ব্যাখ্যা উনি দিয়েছেন সেটা সঠিক নয়। এই বিষয়ে মামলা করব। আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা ন্যায় পাবো। এছাড়া রুটিন দায়িত্বে থেকে ভারপ্রাপ্ত ভিসি এই কাজ করতে পারেন না। তিনি স্বেচ্ছাচার করেছেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে সত্যিই এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কাগজপত্র হাতে না পেয়ে নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। সিন্ডিকেট সভায় কী হয়েছে সে বিষয়েও এখন পর্যন্ত আমরা কিছু নিশ্চিত হতে পারিনি। রেজুলেশন হাতে পেলে সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
Leave a Reply