বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পোড়া ভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে চলমান এই তাণ্ডবের ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভেঙে ফেলা হয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ ঘটনাকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তা ছাত্ররা ভালোভাবে নেয়নি। এটি তারই বহিঃপ্রকাশ।”
তিনি আরও জানান, ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছিল শেখ হাসিনা যেন উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকেন। এ বিষয়ে ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে এবং নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষুব্ধ জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা চালায়। রাতভর চলে ভাঙচুর ও লুটপাট। ভোরে দেখা যায়, এক্সকেভেটর দিয়ে বাড়ির বিভিন্ন অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে রড, এসি খুলে নিয়ে যাচ্ছে, আবার কেউ মোবাইলে ভিডিও করছে।
স্থানীয়দের মতে, এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সম্প্রতি ভারতে অবস্থান করা শেখ হাসিনা অনলাইনে ভাষণ দেওয়ার পর ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
এদিকে, ভারতের সঙ্গে সই হওয়া চুক্তি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “চুক্তিগুলো একতরফাভাবে বাতিল করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে আদানি গ্রুপের সঙ্গে সই হওয়া বিদ্যুৎ চুক্তিতে দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত ছিল না।”
তিনি আরও জানান, আগামী এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করতে পারেন এবং বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে একে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত বলে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন, এটি দীর্ঘদিনের ক্ষোভের ফল।
Leave a Reply