শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধি:পটুয়াখালীর কলাপাড়ার হাজিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক আব্দুর সত্তারের বিরুদ্ধে প্রায় গত তিন মাস ধরে স্কুলে ক্লাশ না করিয়ে বেতন তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে হাজিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক আব্দুর সত্তারের পরিবর্তে ক্লাস নিচ্ছে ছেলে সোয়েব। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, কয়েক মাস ধরে সোয়েব স্যার আমাদের ক্লাস করান।
সত্তার স্যার আসেন না। আব্দুল সত্তার স্যারের ছেলে সোয়েব স্যারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বাবা কয়েক মাস ধরে অসুস্থ থাকার কারণে তার পরিবর্তে ক্লাস করান তিনি। হাজিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের হাজিরা খাতা দেখলে সেখানে পাওয়া যায় সহকারি শিক্ষক আব্দুল সত্তারের প্রতিদিনের স্বাক্ষর। এমনকি বরিশালে চিকিৎসারত অবস্থায় থাকা স্বত্বেও হাজিরা খাতায় রয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্বাক্ষর। ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ সোহাগ’র ফেইজবুক স্ট্যাটাচে গত ৯ মে লেখা আছে ‘আমার বাবা আঃ ছত্তার মাষ্টার গত ০৪/০৫/১৮ইং তারিখ ব্রেন স্টক করেছেন আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন যাতে বাবা তারাতারি সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের প্রশ্ন যদি সে অসুস্থ হয়ে বরিশাল চিকিৎসায় থাকে তাহলে তিনি কিভাবে ওই তারিখ থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিলেন। রোববার (১২ আগষ্ট) সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক শাহজালাল কে না পাওয়ার কারণে কোন শিক্ষক সঠিক উত্তর দিতে অপারগ বলে জানান। কতজন শিক্ষক উপস্থিত আছে জানতে চাইলে তারা ৪ জনের কথা বললেও রাশেদুজ্জামান খান ও মো: আমানউল্লাহ এই দুই জন ছাড়া কারো অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে হাজিরা খাতায় চার শিক্ষকের স্বাক্ষর দেয়া আছে। এরা হলেন সহকারী শিক্ষক রাশিদুজ্জামান খান, পরেশ চন্দ্র মজুমজার, মোসা: সাফিয়া বেগম, মো: আমানউল্লাহ। নৈশ প্রহরী আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ছোট চাকুরি করি কোন কথা বলতে পারবো না। অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর সত্তারের ছেলে সোয়েব জানান, তার বাবাকে অসুস্থ অবস্থায় মে মাসের ৫ তারিখে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর পর থেকে অদ্যবধি আমি ক্লাশ করে আসছি। স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও সাবেক ইউপি মেম্বর আবুল হেসেন বলেন, শিক্ষক আ: সত্তার অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই তার ছেলে সোয়েব নিয়মিত ক্লাশ করে আসছেন। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, স্যার অসুস্থ হওয়ার পর আজ প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসছেনা। অভিযুক্ত শিক্ষক আ: সত্তারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, স্কুলে যে একেবারে যাইনি তা সঠিক না। মাঝে মাঝে গিয়েছি। তবে আমি এখন সুস্থ এখন থেকে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করবো। হাজিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ জালালের সাথে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বাক্ষাতে বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
পরে এসে তিনি বলেন সত্তÍার স্যারে একজন ভাল শিক্ষক তিনি অসুস্থ মানবিক কারনে তাকে ক্ষমা করা হোক। স্বাক্ষরের বিষয় তিনি বলেন, তিনি অসুস্থ, ক্লাশ না করেও স্বাক্ষর দিয়েছে এটা ভুল হয়েছে। উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা মো: মনিরুজ্জামান জানান, আমি কিছুই জানিনা। তদন্ত করে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।
Leave a Reply