সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভেঙ্গে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ফেসবুক ও ইউটিউবে নুরুজ্জামান কাফির তৈরি বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট দেখে প্রতিশোধ নিতে তার বসতঘর পুড়িয়ে দেয় শাহাদাত (২২) এবং মাহফুজ (২১) নামের দুই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠনের কর্মী। তারা কাফির বাড়ি পোড়ানোর ভিডিও কনটেন্টও তৈরি করে। রবিবার রাতে বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদ। তিনি বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায়, বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ ও স্থানীয় তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে এবং মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীকে সনাক্ত করে। তাদের অবস্থান ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে পটুয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে রবিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ টিম তাদের গ্রেফতার করে। মোঃ শাহাদাত হাওলাদার (২২), বরগুনার আমতলী ইউনিয়নের সেকান্দাখালী, ০৮ নং ওয়ার্ডের মোঃ নসা হাওলাদারের ছেলে এবং মোঃ মাহফুজ মোল্লা (২১) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব টিয়াখালী গ্রামের মোঃ হিরণ মোল্লার ছেলে। তারা বরিশালের একটি কলেজে অনার্সের ছাত্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত মোঃ শাহাদাত হাওলাদার (২২) ও মোঃ মাহফুজ মোল্লা বরিশাল থেকে রাত ৮ টার দিকে বাস যোগে বরগুনার আমতলি এলাকায় বান্দুরা স্ট্যান্ডে আসে। সেখান থেকে তাদের পরিচিত একটি দোকান থেকে ৫০০ টাকার ডিজেল কিনে ভাড়া করা একটি মোটর সাইকেলে কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া এলাকায় গিয়ে কাফির বাড়ির আশেপাশে অবস্থান নেয়। পরে সুবিধামত সময়ে রাতের আধারে কাফির বসতঘর ও রান্নাঘরের দেয়ালে, চালে, কাঠে ও টিনের বিভিন্ন জায়গায় ডিজেল ছিটিয়ে দেয়। তারা বাড়ির পিছনের দরজা দড়ি দিয়ে বেধে রেখে শাহাদাত ম্যাচ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেলে চলে আসে। এ ঘটনার ভিডিওও তারা নিজেদের মোবাইলে ধারণ করে। ঘটনার পরদিন তারা বাসযোগে বরিশাল চলে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় আরও কোনো ইন্ধনদাতা বা সহায়তাকারী থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসংগত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে নুরুজ্জামান কাফির গ্রামের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই সময় ঘরে বসবাসরত কাফির পরিবারের সদস্যরা দ্রুত বেরিয়ে যান এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কাফি বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১৬/৫৫।
Leave a Reply