শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। মহামারি করোনা ভাইরাসের আতংকে সারাদেশ এখন লগডাউন চলছে এমনি অবস্থায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়ায় অসহায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
এই চিত্র খুুঁজে পাওয়া গেছে ,পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার সংলগ্ন আদর্শ আবাসনের মানুষগুলোর মাঝে। একমাসের লকডাউনে কোন কাজ-কর্ম করতে না পেরে তারা আজ অসহায় হয়ে পড়েছে। করোনা শুরু হতে আজ পর্যন্ত তাদের কাছে তেমন কোন সরকারী ত্রাণ পৌঁছায়নি। কেন বা কি কারনে তারা সরকারী ত্রাণ হতে বঞ্চিত রয়েছেন তার কোন সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবাসনের ২৮ টি পরিবারের চরম দূর্দশার কাহিনী। কারোও ঘরেই খাবার চাল নেই, বাজার নেই সবাই কান্নাজড়িত হয়ে পড়েন। ২৮ টি পরিবারে প্রায় পাঁচশতাধিক মানুষ রয়েছে। এদের মধ্যে ৬ পরিবারের প্রতিতবন্ধি সদস্য রয়েছে। দু- একজনের প্রতিবন্ধি কার্ড থাকলেও বাকীদের ভাগ্যে তেমন কোন কিছুই জোটেনি। আবাসনে খালেক ব্যাপারীর (৬০) পরিবারটি খুবই শোচনীয় অবস্থা দেখতে পাওয়া যায়। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে প্যারালাইসিস অবস্থায় রয়েছেন।
একমাত্র ছেলে আলমগীর ব্যাপারীর উপার্জনে তাদের সংসার চলতো। সেও আজ দীর্ঘদিন যাবৎ দূরারোগ্য যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এখন একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হলেন খালেক ব্যাপারীর স্ত্রী রেহেনা বেগম (৫০)। রেহেনা বেগম হীড বাংলা নামক একটি এনজিও তে রান্নার কাজ করে কোন মতে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। করোনা আতংকে সে পথও তার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
এখন সাত সদস্যের এ পরিবারটি অসহায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রতিবেশীদের বাড়ী হতে ধার করে এনে একবেলা আধপেটা খেয়ে জীবন কাটাচ্ছে। আবাসনের আরেকটি অসহায় পরিবারের প্রধান হলেন স্বপন চক্রবর্তী (৫০)। পাখিমারা বাজারে ছোট্ট একটি লন্ডির দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। লকডাউনের কারনে তা বন্ধ রয়েছে।
অসুস্থ শাশুড়ীসহ চার জনের পরিবারটি আজ অসহায় অবস্থায় দিনপাত করছে। সরকারী একটি ভিজিটি কার্ড ছাড়া আর কোন কিছুই তার ভাগ্যে জোটেনি। স্ত্রী সন্ধ্যা চক্রবর্তী দীর্ঘ এক বছর যাবৎ ষ্টোক করে প্যারালাইসিসে রয়েছে। অদ্যাবধি একটি প্রতিবন্ধিকার্ডও জোটেনি তার ভাগ্যে। আবাসনের প্রায় সব কয়টি পরিবারের একই অবস্থা দেখতে পাওয়া যায়।
মানবতা যেনো এখানে এসে থমকে দাঁড়ায়। জানা যায়, তাদের প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার গল্প কাহিনী। তাদের সকলের দাবী আমাদের আদর্শ গ্রামে দুই একজন ছাড়া কেহ সরকারি ভাবে কিছু পাইনি। আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে বললে তারা বলেন, আমাদের কিছু করার নাই আপনারা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কাছে গিয়ে বলেন।
নীলগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির মাহমুদ বলেন, সরকার যে ত্রাণ বরাদ্ধ দেয় তা চাহিদার তুলনায় খুবই সীমিত। পরবর্তী ত্রাণ আসলে আবাসনের পরিবারগুলোকে দেয়ার ব্যবস্থা করবো।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহিদুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি তারা কোন ধরনের ত্রাণ পেয়ে না থাকে তবে পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply