বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করার জেরে আপন চাচাতো ভাই বাদল হাওলাদারকে ফিল্মি কায়দায় গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন স্বামী সোহেল হাওলাদার ও তার লোকজন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও পুলিশের সহায়তায় বাদলকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত বাদল হাওলাদার বলেন, ‘আমি ঢাকায় একটি বাইংহাউজে কাজ করি। ছুটিতে বাড়ি আসার পর গতকাল শুক্রবার আমি চান্দুখালী খালার বাড়ি বেরাতে যাই। বিকেলের দিকে বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাওয়ার সময় হঠাৎ একটি সাদা রঙের গাড়ি আমার গা ঘেঁষে থামায়। দরজা খুলেই টেনে আমাকে গাড়ির ভেতরে তুলে নেয়। ভেতরে উঠে দেখি আমার চাচতো ভাই সোহেল, তার শ্যালক আল আমিনসহ চার-পাঁচজন লোক। গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার পথে সবাই মিলে আমাকে বেদম মারধর করে।’
তিনি বলেন, ‘পরে চালিতাবুনিয়ায় সোহেলের শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে গাড়ি থামানো হয়। টেনে-হিঁচড়ে ওর শ্বশুর দুলাল খানের ঘরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে সবাই মিলে আবার আমাকে মারতে শুরু করে। পরে আমাদের স্থানীয় কাকড়াবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন ও মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে এবং বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরকীয়ার অভিযোগের বিষয়ে বাদল হাওলাদার বলেন, ‘কয়েক মাস আগে সোহেলের বউ আসমা আমার সাথে রিকশায় উঠছিল। তা দেখার পর থেকেই আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল সোহলে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এমন সংবাদ পেয়ে থানার এসআই মো. সাইফুল ইসলামের সহযোগিতায় বাদলকে উদ্ধার করে বরগুনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা খুবই খারাপ।
সোহেলের শ্বশুর দুলাল খান বলেন, ‘প্রায় আট-নয় বছর আগে উত্তর গাবুয়া গ্রামের খলিল হাওলাদারের ছেলে মো. সোহল হাওলাদারের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। ভালোই কাটছিলো ওদের সংসার, সাত-আট বছরের একটি ছেলেও আছে ওদের। কিন্তু মাস ছয় আগে আমার জামাইয়ের চাচতো ভাই মজিদ হাওলাদারের ছেলে মো. বাদল মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। কিছু দিন আগে আমার বাবা মারা যাওয়ায় আসমা আমাদের বাড়িতে আসে। পরে ওকে বুঝিয়ে জামাইয়ের সাথে সংসার করার জন্য বলি। জামাইও ছেলেটির মুখের দিক তাকিয়ে সম্মতি দেয় একসাথে সংসার করার।
তিনি বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার বাবার নামে দোয়া অনুষ্ঠান ছিল। জামাই সোহেলও আসে আমাদের বাড়িতে। ওই সময় বাদল আমার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এলাকায় আসে। বাদলকে জিজ্ঞেস করি সে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে কিনা। সে বলে না, করবো। তারপর সোহেল ও বাদলের মাঝে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর শুনে ঘটনাস্থল থেকে বাদলকে উদ্ধার করে বরগুনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply