রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ আল্ট্রাসনোগ্রামে গর্ভের শিশুর হার্টবিট না পেয়ে চিকিৎসকের মৃত ঘোষণার পর সড়কে অ্যাম্বুলেন্সে প্রসবের পর শিশুটি জানান দিল সে জীবিত। সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়কে এক অ্যাম্বুলেন্সে এ শিশুর জন্ম হয়েছে।
শিশুটির মা ফাতেমা বেগম (২৩) উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শরিফের স্ত্রী। মৃতশিশু ঘোষণাকারী চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়া বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রামে গর্ভের শিশুর হার্টবিট না থাকায় ‘আইইউডি’ উল্লেখ করে দ্বিতীয়বার দেখার জন্য বরিশালে রেফার্ড করা হয়েছিল।
প্রসূতি ফাতেমা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত শনিবার সকালে স্থানীয় এক ধাত্রী তার স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে রাতে প্রসূতিকে উপজেলা সদরের সিটি হার্ট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনিস্টিক সেন্টারে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়ার কাছে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সেখানে করানো আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থাপত্রে ‘আই ইউ ডি’ অর্থাৎ ‘জরায়ুর ভেতরে সন্তান মৃত’ উল্লেখ করে ওই রোগীকে বরিশালের হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক।
রোববার প্রসূতিকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায় তার পরিবার। এখানে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. নুর মোহাম্মদ তালুকদার বে-সরকারি ক্লিনিকের চিকিৎস ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়ার রিপোর্ট দেখে হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি দেন। তবে প্রসূতির মামি জান্নাতুল ফেরদাউস জানান, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক অপারেশন করা সম্ভব না বলে জানান এবং রোগীকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
পরিবারটি অস্বচ্ছল হওয়ায় সন্ধ্যায় স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে প্রসূতিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে হাসপাতালের সামনের সড়কেই জীবিত ছেলে সন্তান প্রসব করেন সেই মা বলেন তিনি। এ সময় পার্শ্ববর্তী এক বেসরকারি হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আইইউডি মানে জরায়ুর ভিতরে নবজাতক মৃত উল্লেখ করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বশাক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, শিশুর হার্টবিট না থাকলে অনেক সময় এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে আরও সাবধান ও সচেতন হতে বলা হবে।
Leave a Reply