শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
এইচ,এম হেলাল ॥ বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন (বাস-মিনিবাস,কোচ,মাইক্রোবাস) শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রায় এক কোটি ২৩ ল ৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও চাপা ােভ বিরাজ করছে। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে ইউনিয়নের প থেকে কর্মহারা শ্রমিকদের পাশে কেউ দাড়ায়নি। তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি মানতে নারাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন। তার দাবী শ্রমিক ইউনিয়নে যে অর্থ আসে তার চেয়ে ব্যয় বেশি হয়েছে। এদিকে নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর সাধারণ সভা করার কথা থাকলেও গত ৬ বছরে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ কোনো সভা করেননি।
জানা গেছে, জনতা ব্যাংক নতুন বাজার শাখায় শ্রমিক ইউনিয়নের নামে ১৯৮৫ সালে একটি এল.বি.আর একাউন্ট খোলা হয়। ২০১৬ সালে সাবেক সাধারন সম্পাদক মোস্তফা সেই একাউন্ট থেকে ২ লাখ টাকা লোন নেন। ওই লোনের টাকা দিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নামে একটি গাড়ি (বিএমএফ পরিবহন) ক্রয় করেন গাড়ি যার নং বরিশাল ব-১১-০০-৪০। গাড়িটি ২২ লক্ষ টাকায় লিজ নেন বজোবাবু নামে এক ব্যাক্তি। চুক্তি থাকে যে এককালিন ২২ল টাকা ও প্রতি মাসে ১ ল ১৫ হাজার টাকা শ্রমিক ইউনিয়নে জমা থাকবে। হিসেব অনুযায়ী ২ বছর ৪ মাস গাড়ি লিজ চলমান অবস্থায় ৩২ ল ২০ হাজার টাকা আসে। অপরদিকে শ্রমিক ইউনিয়নের নামে সাউদিয়া কাউন্টার থেকে ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৫হাজার ও তিনটি স্টল থেকে ৩ হাজার টাকা ভাড়া নেন শ্রমিক ইউনিয়ন। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফরিদ হোসেন। তিনি বলেন, এলবিআর একাউন্ট থেকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা ২ ল টাকা লোন নেয়। পরে লোন পরিশোধ করতে না পারায় এলবিআর একাউন্ট কোজ করা হয়।
জানা গেছে, বাস মালিক সমিতি থেকে শ্রমিক ইউনিয়নকে দুস্থ, পঙ্গু কল্যান বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৮০ থেকে ১ ল টাকা দেয়া হতো। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে সাধারণ সম্পাদক ফরিদ বলেন, সাবেক সাধারন সম্পাদক মোস্তফা ২৬ জন শ্রমিকদের পাশে থাকেননি। ওই সকল শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন যারা সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু বা মৃত্যুবরন করেছেন। অবশ্য তাদের মাঝে ১৫/২০ জনকে আমরা ২০ হাজার টাকাও দিয়েছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হোটেল কস্তরী থেকে প্রতি মাসে পাই ২০ হাজার টাকা। তবে ৩০ হাজার টাকা ভাড়া ১০ হাজার টাকা কেটে দেয়া হচ্ছে। কারন কস্তরী মালিক আমিনুল ইসলাম ৪১ ল টাকা ব্যায় করে দোকান তৈরি করেছেন এজন্যই দশ হাজার টাকা কম নেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, কস্তরীর পাশে ৮টি স্টল রয়েছে যা শ্রমিক ইউনিয়নের ফান্ডের টাকায় নির্মিত। কস্তরীর হোটেল ভাড়া বর্তমানে সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন নেন বলে জানান তিনি।
একাধিক শ্রমিকরা বলছেন প্রতি বছর সভাতো দূরের কথা গত ৬ বছর যাবত আয় ব্যয়েরই কোন তথ্য আমরা জানিনা। লোনের বিষয়টি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফার কাছে জানতে চাইলে তার মুঠো ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সুত্রে জানা গেছে, বিএমএফ গাড়িটি ক্রয় করা হয়েছে ৪বছরের বেশি সময় হয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়নের নামে স্টল রয়েছে প্রায় ১৪টি। শ্রমিক ইউনিয়নের স্টাফ কার্ডের পিছনের পাতায় লেখা রয়েছে কর্মরত অবস্থায় কোন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলে তাহার পরিবারবর্গকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। নিয়মিত সদস্য স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করিলে তার পরিবারবর্গকে ৪০ হাজার টাকা সাহায্য প্রদান করা হবে। এসকল নিয়মনীতি এক কথায় উড়িয়ে দিলেন ফরিদ। তিনি বলেন, এগুলো কোনো নিয়ম না। শ্রমিকদের দেখানোর জন্যই লেখা হয়েছিলো। তবে আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এই লেখাগুলো সংশোধন করার কথা ছিলো। নানান ব্যাস্ততায় আর সংশোধন করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply