শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক।। ঈদের আনন্দ প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে রাজধানী থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষজন।রোববার (০২ জুন) দিবাগত মধ্যরাত দেড়টা থেকেই বরিশাল নদী বন্দরে একে একে সরাসরি রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো এসে পৌঁছাতে শুরু করে। ফলে নদী বন্দর ও আশপাশের এলাকায় মধ্যরাত থেকেই ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।
যদিও লঞ্চগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে। আর এতে করে মধ্যরাতে যাত্রীদের অনেককেই নদীবন্দর এলাকায় সকাল হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।এদিকে ঈদের সময় যতো ঘনিয়ে আসছে ততোই রাজধানী থেকে দক্ষিনাঞ্চলমুখি লঞ্চগুলোতে ভিড় বাড়ছে।
নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, রোববার (০২ জুন) বিকেল থেকে যাত্রী নিয়ে রাজধানীর সদরঘাট থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের নানান রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে এসেছে।ধারাবাহিকতায় মধ্যরাত থেকে বরিশাল নদীবন্দরে লঞ্চগুলো এসে পৌঁছালে বেড়ে যায় যাত্রীদের ভিড়।
নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষে তথ্যানুযায়ী রাত দেড়টায় প্রথমে ঢাকা থেকে ঘরমুখো মানুষদের নিয়ে বরিশালে এসে পৌঁছায় এমভি মানামী নামে লঞ্চটি। এরপর একে একে এমভি টিপু-৭, অ্যাডভেঞ্চার-১ সহ বেশ কয়েকটি লঞ্চ।এছাড়া ভায়া রুটের ৪টি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দরে যাত্রী নামিয়ে পরবর্তী স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
তবে সরাসরি রুটের ১০টি লঞ্চের মধ্যে কমপক্ষে ৩টি লঞ্চ বন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে ফিরে যাবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরিশালের পরিদর্শক কবির হোসেন।
সুমাইয়া নামে ঢাকা থেকে আগত এক লঞ্চযাত্রী জানান, ঈদ করতে সন্তান-স্বামীর সঙ্গে শ্বশুর বাড়ি বরিশালে এসেছেন। তবে গতবারের মতো এবারে যাত্রীর চাপ না থাকায় বেশ ভালোভাবেই এসেছেন। তবে মধ্যরাতে লঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ায় ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত নদীবন্দরের যাত্রী ছাউনিতে অপেক্ষা করতে হবে।এদিকে সড়কপথে পর্যাপ্ত যানবাহন থাকায় মধ্যরাতেই বেশিরভাগ যাত্রী পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন।
মোখলেস নামে এক যাত্রী জানান, নদীবন্দর এলাকায় পুলিশের যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রচুর যানবাহনের সমাগম থাকায় নদীবন্দরে বসে না থেকে রাতেই বাসায় যাচ্ছেন। সেহেরিটাও ভালোভাবে খেতে পারবেন।
লঞ্চ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা স্টাফরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই স্পেশাল সার্ভিসে লঞ্চগুলো যাত্রীনামিয়ে দিয়েই চলে যায়। এমনটাই হয়ে আসছে। যা এ রুটের যাত্রীরা অবগত রয়েছেন। আর নদীবন্দর ও ঘাটগুলোতে নামিয়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে।
যাত্রীদের নিরাপত্তায় বরিশাল নদীবন্দর এলাকায় মধ্যরাত থেকেই বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বরিশাল সদর নৌ থানা পুলিশ, মেট্রোপলিটনের কোতায়ালি মডেল থানা পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। যারমধ্যে ডিবি পুলিশের নারী সদস্যদের উপস্থিতিও ছিলো চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি পল্টুন ও আশপাশের এলাকা সাদা পোশাকে পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।অপরদিকে বরিশাল নদী বন্দরের আশপাশের এলাকায় মধ্যরাত থেকেই যানবাহনে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বজায় রেখেছে ট্রাফিক বিভাগ। যে কাজে সহায়তা করছে আনসারসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
তবে মধ্যরাত হওয়ায় স্বাভাবিকের থেকে ভাড়া বেশি চাচ্ছে যানবাহনের চালকরা- এমন অভিযোগ যাত্রীদের।অপরদিকে অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চগুলো ৫টার পর থেকে যাত্রা শুরু করলেও সেগুলোতে যাত্রীরা গিয়ে অবস্থান নিয়েছেন।এদিকে রাত ১২টার পরপরই নদী বন্দর এলাকায় সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে আসেন সিটি মেয়র সেরনিয়বোত সাদিক আব্দুল্লাহ, নগর পুলিশের কমিশনার শাহাবুদ্দিন খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
Leave a Reply