সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০০ অপরাহ্ন
শামীম আহমেদ ॥ বরিশালে কোভিট (১৯) প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম ও সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করনের লক্ষে এবং নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধকরণের প্রতিদিনের ন্যায় কার্যক্রমের অংশ হিসাবে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমানের নির্দেশে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৩ই) এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বরিশাল মহানগরীর রুপাতলী এলাকায় মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালিত হয়।
এসময় মোবাইলকোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দায়ীত্ব¡রত সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় অবহেলা ও সামাজিক দূরত্ব বিষয়ক সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে যাত্রী বহনকারি ঢাকাগামী দুইটি মাইক্রোবাস এবং একটি পিকআপ ট্রাক আটক করা হয়। একটি মাইক্রো বাসে দুই পরিবারের ১৪ জন এবং আরেকটি মাইক্রোবাস দশ পরিবারের মোট ১২ জন যাত্রী গাদাগাদি করে ঢাকার উদ্দেশ্যে বরিশাল ত্যাগ করার প্রস্তুতি গ্রহন করছিলেন।
প্রথম মাইক্রোবাসে দুই পরিবারের দুই কর্তা এবং চালক ও তার সহযোগী প্রত্যেককে করোনা নিয়ন্ত্রন প্রতিরোধ দন্ডবিধির ২৬৯ ধারা মোতাবেক এক হাজার টাকা করে মোট চার হাজার টাকা সহ দ্বিতীয় মাইক্রোবাসে দশজনকে একই আইনে এক হাজার টাকা করে দশ হাজার টাকা এবং পিকআপ ট্রাকের চালককে একই আইনে এক হাজার টাকা সহ সর্বমোট পনের হাজার টাকা টাকা অর্থে দন্ডে দন্ডিত করা হয়।
পাশাপাশি প্রাণসংহারী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে সর্বাবস্থায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে সচেতনতামূলক দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। একই সময়ে রুপাতলী বাস স্টান্ড এলাকায় জনসমাগম রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
অপরদিকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম নগরীর সদর রোড, নতুল্লাবাদ, চৌমাথা ও কাশীপুর, সাগরদী এলাকায় মোবাইল কোর্টের পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
উক্ত কার্যক্রম পরিচালনায় করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। এ সময় তিনি বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি সবাইকে নিদিষ্ট প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে এবং এ আদেশ অমান্যাকরীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এসময় সাগরদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩টি অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার অপরাধে সংক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৪ ধারা অনুযায়ী শিকদার হার্ডওয়ার এর কর্মচারি আমিন কে ৫ হাজার টাকা। জাহিদ ট্রেডার্স এর মালিক মোঃ জাহিদুল ইসলাম কে ৩ হাজার টাকা এবং মা হার্ডওয়ার এর মালিক মোঃ শাহাদাত কে ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
পরে চৌমাথা বাজার এলাকায় দুটি পণ্যবাহী পিকাপ ভ্যানে যাত্রী পরিবহন করার দায়ে সংক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৪ ধারা অনুযায়ী দুই চালক মোঃ রেজাউল কে ৪৫০০ টাকা এবং মোঃ মন্টু কে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় পাশাপাশি ২১ জন যাত্রী কে চারশত টাকা করে মোট ৮ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়। মোট ২৮ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় অভিযানে প্রসিকিউসন অফিসার হিসাবে সহযোগিতা করেন কোতয়ালী মডেল থানার এসআই ফিরোজ আল মামুন এবং এসআই রফিকুল ইসলাম। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।
অভিযান কালে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রট বলেন বরিশাল নগরী ও জেলার জনস্বার্থে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে সকলকে মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখা হবে।
Leave a Reply