সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন
ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় খরচ কমেছে একাডেমিক, হল ও পরিবহণ খাতে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ভর্তি ফি কমানো হয়নি। এছাড়া বাসে না চড়েও পরিবহন ফি, হলে না থেকেও হল ফি পরিশোধ করতে হচ্ছে।
এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষার টিউশন ও পরিবহণ ফি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি পরিবহন ও হল ফি মওকুফ করা হোক।
সম্প্রতি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রকাশিত একটি নোটিশকে কেন্দ্র করে আপত্তি তুলে শিক্ষার্থীরা। এতে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ২য় বর্ষ ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ৩য় বর্ষ, ২য় সেমিস্টারে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা পরিবহন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবে ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কোনো শিক্ষার্থী পরিবহন সার্ভিস ব্যবহার করেনি এবং আবাসিক শিক্ষার্থীরাও হলে অবস্থান করতে পারেনি। বৈশ্বিক এই মহামারির প্রভাবে অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে পরিবহন সেবা ও আবাসিক হিসেবে না থেকেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক চাপিয়ে দেয়া এই আর্থিক বোঝা বহন করা অযৌক্তিক এবং অনেকের জন্য অসম্ভব প্রায়। তাই শিক্ষার্থী হিসেবে আবাসিক হল ফি ও পরিবহন ফি মওকুফ চাই।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী খাজা আহমেদ বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে মারাত্মক ভয়াবহতার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে দেশের শিক্ষার্থীরা। ক্যম্পাস খোলা থাকলে টিউশনির মাধ্যমে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে চলার মতো অর্থের ব্যবস্থা করে থাকেন। বর্তমান এই মহা দুর্যোগের কারণে সিংহভাগ শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ধরে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। পারিবারিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে আছে সব ধরনের পরিবার। এমতাবস্থায় পরিবারকে চাপের মধ্যে রেখে পরিবহন ফি কিংবা আবাসিক হল ফি দেয়া সত্যিই অনেকের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলী হোসেন বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আজ ১৭ মাসের বেশি। শিক্ষার্থীদের জন্য ঘুরছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের চাকা, জ্বলছে না হলের বাতি, তারপরও দিতে হবে পরিবহন ও আবাসিক হল ফি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশের পরিবার যেখানে করোনা প্রকোপে কর্মহীন, সেখানে ববি প্রশাসনের এরকম সিদ্বান্ত শিক্ষার্থীদের উপর জুলুম এবং শিক্ষার্থীদের জন্যে হতাশাজনক। আশা করি ববি প্রশাসন তাদের গৃহীত সিদ্বান্তকে বিবেচনায় নিয়ে একাডেমিক খরচসহ ধার্যকৃত যে সকল ফিগুলোর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক ছিলো না সেগুলোকে বাতিল করবেন। এবং পরবর্তিতে যৌক্তিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্বান্ত গ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিকট যৌক্তিকতা তুলে ধরে দাবি করলে সেটা নিয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য যেটা ভালো হয় এবং শিক্ষার্থীদের যাতে কষ্ট না হয় সে বিষয়ে আমরা বিবেচনা করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি ফি মওকুফের দাবি করে সেটা বিবেচনা করা হবে।
Leave a Reply