রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ॥ বরগুনায় এক মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, রিফাত শরীফ হত্যার অন্যতম কারণ মাদক ও কিশোর গ্যাং। রিফাত হত্যায় জড়িত ০০৭ নামের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সংখ্যা ২৬০।তিনটি ‘পরীক্ষায়’ পাস করে এই গ্যাংয়ের সদস্য হতে হয়। প্রথমত, অবশ্যই তাকে মাদকসেবী হতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাকে মাদক ব্যবসায় যুক্ত হতে হবে। তৃতীয়ত, এ বাহিনীর সদস্য হিসেবে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট, অপহরণ ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া বরগুনায় টিম সিপটি ওয়ান, লারেলাপ্পা, হানিবন্ডসহ বিভিন্ন নামের কিশোর গ্যাং রয়েছে। সব মিলিয়ে এদের সদস্য সংখ্যা হবে সহস্রাধিক।
বক্তারা বলেন, কিশোর গ্যাং সদস্যদের বয়স ১২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। শুধু হাতেগোনা কয়েকজনের বয়স ৪০-এর মধ্যে। বরগুনার মতো ছোট একটি জেলায় এত মাদক ব্যবসায়ী বা সন্ত্রাসী থাকলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হওয়াই স্বাভাবিক।
সোমবার সকালে বরগুনা প্রেস ক্লাবের সামনে স্থানীয় নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বরগুনা জেলা মহিলা পরিষদ, সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক, পরিবেশ আন্দোলন, বরগুনা জেলা রোভার, আলোকযাত্রা ও লোকবেতার অংশ নেয়। বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি আনিচুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বরগুনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি চিত্তরঞ্জন শীল, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সেক্রেটারি মনির হোসেন কামাল, মহিলা পরিষদের সভাপতি নাজমা বেগম, জাতীয় মহিলা সংস্থা বরগুনা জেলা শাখার চেয়ারম্যান হোসনেয়ারা চম্পা, বুড়িরচর এএমজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেলি পারভীন ছবি, পরিবেশ আন্দোলনের সেক্রেটারি মুশফিক আরিফ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মাদকের নিরাপদ রুট এখন বরগুনা। পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাগর থেকে জেলেদের ট্রলারে মাদকের চালান আসে। মটোরবাইকে সংবাদকর্মীর স্টিকার লাগিয়ে মাদক পরিবহন করা হয়। বরগুনায় রিফাত হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের পেছনে মাদকই প্রধান ভূমিকা পালন করছে। আর মাদকসেবী এবং কারবারিদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের যোগাযোগ রয়েছে।
মানববন্ধন শেষে ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দাবির মধ্যে রয়েছে- বরগুনায় মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে; সড়কপথ ও নৌপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে; বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে; তাদের জন্য অত্যাধুনিক জলযানসহ একটি সি-প্লেনের ব্যবস্থা করতে হবে; বরগুনায় একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র করতে হবে; সন্ধ্যার পর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও কোচিং বন্ধ রাখতে হবে এবং মাদক উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে; বরগুনার সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্থায়ী চেকপোস্ট বসাতে হবে এবং সন্দেহজনক ব্যক্তিদের তল্লাশি করতে হবে; মাদক কারবারিদের দ্রুত বিচার করতে হবে।
বক্তারা বলেন, বরগুনায় সড়কপথ ছাড়াও বঙ্গোপসাগর হয়ে নৌপথে মাদকের বড় বড় চালান আসে। এর একটা অংশ কিশোর মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের কাছে চলে যায়। মাদক কারবারের টাকায় বরগুনায় অনেক ভূমিহীন পরিবারের সন্তানও অত্যাধুনিক মোটরসাইকেল চালায় এবং ৫০-৬০ হাজার টাকা দামের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে।সুত্র,দৈনিক সমকাল
Leave a Reply