বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
এইচ, এম হেলাল॥ বরিশালে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন রোধে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৬ কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্লক তৈরিতে এ অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন নদী তীরের ভাঙন কবলিত ৩নং চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ এ প্রকল্প ভালোভাবে বাস্তবায়ন না হলে ভিটামাটি হারিয়ে পথে বসতে হবে তাদের।
অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকে প্রকল্পের কাজ দেখভাল করছেন না পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যেমন তেমন ভাবে ব্লক তৈরি করেছেন বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ছাফাই গেয়ে সকল অভিযোগ ছুড়ে দিলেন প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত¦াবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ সফি উদ্দিন। তার দাবী খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে সাব কন্ট্রাক্টে প্রকল্পের কাজ করছে “মিলন ট্রেডার্স” ১০০% সঠিক ভাবে তারা ব্লক তৈরি করেছেন।
এই কর্মকর্তা কাজের সাইডে না গিয়ে তিনি সঠিক ভাবে ব্লক তৈরি করা হয়েছে তার এমন মন্তব্য প্রশ্ন বিদ্ধ করে জনসাধারনকে। এদিকে ২০২০ সালের জুলাই মাসের ২০ তারিখের প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। অপরদিকে ব্লকের মান নিয়েও প্রশ্নœ তুলেছেন স্থানীয়রা।
তারা জানান, ব্লক তৈরিতে যে সাইজ এবং মানের পাথর ব্যবহার করার কথা রয়েছে তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। নদীর ভাঙন রোধে (পুরান টাওয়ার থেকে দর্জি কালামদের বাড়ি পর্যন্ত ) ব্লক ও জিও ব্যাগ কাজের জন্য ১৬ কোটি টাকার প্রকল্পটি পায় “মিলন ট্রেডার্স”।
সাইডে ইঞ্জিনিয়ার রাখেননি বলে একটি বিশ^স্ত সুত্র নিশ্চিত করেছে। এবিষয় প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত¦াবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ সফি উদ্দিন বলেন, নদীর ভাঙন রোধে যত গুলো সাইড আছে তার মধ্যে “মিলন “মিলন ট্রেডার্স ” ভালো কাজ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, সরোজমিনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যাওয়া লাগে না। ব্লক বানিয়ে রাখা হয়। পরে চাসপোস্ট এসে যে ব্লকটা খারাপ ওই ব্লকটা দেখে ঢাকায় অথবা খুলনায় টেস্টে পাঠাবে। আমার অফিসে অনেক চিঠি , মনে করেন ২০ হাজার ব্লক হইছে তার মধ্যে তিন হাজার মাইনাস ।
ওই সাইডের টেস্ট রিপোর্ট সব চাইতে ভালো হইছে। আমার ১০ লাগে, ১৫ পর্যন্ত আছে এবং বুয়ের্ট রেজাল্ট এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের হানড্রেডে হানড্রেড কাজ।
কোনো ডির্পামেন্টে নাই একবারে চ্যলেঞ্জ। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারো স্বার্থে লাগলে তো অভিযোগ থাকবেই।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতেই কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন রোধে ১৬ কোটি টাকার কাজটি পায় “মিলন ট্রেডাস” মালিক ছত্তার।
তিনি নগরীর রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা। তার মুঠো ফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, সাইড ইঞ্জিনিয়ার থাকলেও কি বলবে ? বর্তমানে সাইড দেখাশুনা করে আমার ভাই মামুন। মামুন আর একজন স্টাফ আছে তারা ব্লকে পানি দিতাছে।
সাইডে যদি লোকজন না যায় তদারকি করে কে ? সরোজমিনে গিয়ে “মিলন ট্রেডার্স” এর নৈশ প্রহরীর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড দিয়ে আগে আইছেলে,এহন আর আয় না । এরপর তিনি একটি বে ফাঁস মন্তুব্য করেন। যার একটি ভিডিও রেকর্ড রয়েছে এই প্রতিবেদকের কাছে।
অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, “মিলন ট্রেডার্স” নামে কাউকে কাজ দেয়া হয়নি। কেনো ওর কাজ চেক করা হয়না কেনো ওকি আমার দুলাভাই লাগে নাকি। ব্লক যখন বানায় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোক থাকে।
ব্লক বানানোর সময় যদি পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোক না থাকে সেই ব্লক এ্যাকসেপ্ট করিনা ব্লক রিজেক্ট করে দেই আমরা। “মিলন ট্রেডার্স” নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কোনো কাজ দেয়া হয় নাই। বন্যার সময় এখন পানি তাই কাজ করতে পারছেনা ,যেখান থেকে পাথর আনবে সেখানে পাথর পাওয়া যাচ্ছে না।
আমি তো কয়েক দিন আগে ঘুরে আসলাম। সিপ পাইল দেয়া হয়েছে। নদী থেকে বালি উত্তলনকারীদের সাথে আতআত করে টাকা খায়। আমি বারবার বলছি নদী থেকে বালি উত্তলনে বাধা দিতে,সেই সময় স্থানীয়রা বলে জি স্যার জি স্যার।
আমি জোর গলায় বলতে পারি আমি পয়শা খাইনা।
ব্লক বানানোর আগে যখন মিকচার করে, মিকছার ঠিক হইছে কিনা ওইটা দেখে মিকচার ঠিক হলে পরে ব্লক ঠিক আছে। যখন ব্লক বানায় তখন আমাদের লোক থাকে। ব্লক বানানোর সময় আবার চেক করা হয়। বরিশালে না , ঢাকায় আমাদের মনিটরিং সেল আছে ।
মনিটরিং সেল এসে ওইগুলা চেক করে। মনিটরিং সেল যখন কিলিয়ারেন্স দেয় তখন ওইগুলা পানিতে ফালানো হয়। ব্লক সঠিক না হলে রিজেক্ট করা হয়। এপর্যন্ত অনেক গুলা মাল রিজেক্ট করা হয়েছে।
যেটা রিজেক্ট পাবে সেটা রিজেক্ট হয়ে যায়।
সফি উদ্দিন কি বললো? বললো,ও একটা আহম্মক এই বলে তিনি ফোন রেখে দেন।
Leave a Reply