সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন
নাজিরপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের নাজিরপুরে রোববার ৩টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে সেখানে থাকা প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত হামলাকারী মো. কামরুল ইসলাম সুজন (৩৫) নামের এক ব্যাক্তিকে ওই দিন স্থানীয়রা আটক করে থানা পুলিশের সোপর্দ করেছে।
এ সময় তার সাথে থাকা অন্যজন পালিয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান। আটককৃত ওই যুবক জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের রাজাবাড়ি গ্রামের মৃত জয়নাল ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম খান ওই দিন বেলা ১২টার দিকে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
থানা পুলিশের কর্মকর্তা ইনচার্জ মো. মুনিরুল ইসলাম মুনির জানান, উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া গ্রামে ২টি ও দীর্ঘা ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া বাজারের ১টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে এর প্রতিমা ভাঙচুর করে আটককৃত ওই হামলাকারী। জানা গেছে, ওই হামলাকারী ওই দিন সকালে প্রথম উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া বাজারের মন্দির ও পরে কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া গ্রামের ২টি মন্দির ভাঙচুর করে। উপজেলার কলারদোয়ানিয়া গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী সবিতা মল্লিক জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হামলাকারী স্থানীয় শ্রী শ্রী রাধা গবিন্ধ সেবাশ্রম ও কালি মন্দিরে ঢুকে। মন্দিরে নির্মানাধীন কালি’র প্রতিমা ও সেখানে থাকা ঘট ভাংচুর করে।
এ সময় ধাওয়া দিয়ে স্থানীয় জগদ্বিশ চন্দ্র রায়ের পুত্র রামকৃষ্ণ রায় অজিত তাকে ধরতে চাইলে ওই যুবক তাকে মারধর করে পালিয়ে যাইতে চেষ্টা করে। এ সময় আমাদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ওই যুবককে আটক করে। এর আগে আটককৃত ওই যুবক স্থানীয় মাস্টার অধীর মল্লিকের বাড়িতে থাকা শ্রীশ্রী গোবিন্দ মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করে। ওই বাড়ির গৃহবধু গৌরি মল্লিক জানান, আমি পুজা দিতে মন্দিরের তালা খুলে ফুল আনতে যাই। ফিরে আসার সময় দেখি ওই যুবক বাড়ি থেকে দৌড়ে যাচ্ছে। পরে মন্দিরে ঢুকে দেখি সেখানে থাকা সকল প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। এর আগে একই দিন সকাল ৬টার দিকে ওই যুবক উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া বাজারে অবস্থিত কলারদোয়ানিয়া বাজার সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করার কথা স্বীকার করেছে। ওই মন্দিরের সাধারন সম্পাদক ডাক্তার সুখরঞ্জন মল্লিক জানান, মন্দিরটি তালা দিয়ে আটকা ছিলো। সকাল ৬টার দিকে মন্দিরের তালা ভেঙ্গে ওই যুবক মন্দিরে থাকা প্রতিমা থেকে কার্তিক ঠাকুর, সরস্বতি ও প্রলাদ ঠাকুর সহ ৫টি প্রতিমা ভাংচুর করে। এর আগে সকালে ওই বাজারের আটককৃত ওই যুবকের সাথে আরো এক যুবককে ঘুরতে দেখেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ হায়াতুল ইসলাম খান জানান, সরে জমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ওই যুবক এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তাকে আরো জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।
Leave a Reply