রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে মেয়ের আত্মহত্যার খবর শুনে মা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বৃহস্পতিবার বিকালে মায়ের সাথে অভিমান করে রেশমা আক্তার (১৩) ঘরে রাখা কিটনাশক পান করে। এসময় স্বজনরা তাকে দ্রুত পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১ টার দিকে রেশমা মারা যায়। এ খবর শুনে তার মা মিনারা বেগম (৪৫) নিজ বাড়িতে বসে ঐ রাতেই হার্ট এ্যাটাক করেন।
নিহত রেশমার ভাবি শিল্পী বেগম প্রতিবেদককে জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে রেশমাকে বাড়ির পাশে মাঠ থেকে হাঁস তাড়িয়ে আনতে বললে রেশমা মায়ের কথা না শুনে ঘরে বসে থাকে। এ নিয়ে মায়ের সাথে রেশমার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মা রাগ করে রেশমাকে জুতাপেটা করে।
বিষয়টি রেশমা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে না পেরে তৎক্ষনাৎ সে আত্মহত্যা করবে বলে মায়ের কাছে প্রকাশ করে। রাগের বশে মেয়ে এমন কথা বলেছে বলে মা মিনারা বেগম তখন ধারনা করেন। এসময় তার মাও বলে ’তুই মরবি ক্যা’ মরার সময় অইছে মোর, আমি মরমু’। রাগের বশে মা মেয়ে দুজনে এমন বাক্য বিনিময়ের পর মায়ের সাথে অভিমান করে সন্ধ্যার দিকে মেয়ে রেশমা ধান ক্ষেতের পোকা নিধনের জন্য ঘরে রাখা একটি বোতলের কিটনাশক (বিষ) পান করে।
পরে স্বজনরা টের পেয়ে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হলে সেই খবর পেয়ে মা মিনারা বেগম সাথে সাথে হার্ট এ্যটাক করেন। ঐ রাতে বাড়িতে কোন পুরুষ লোক না থাকায় দুরে কোথাও চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় বাড়িতে বসেই তাকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে শুক্রবার সকালে তাকে চিকিৎসার জন্য পিরোজপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে মা মিনারা বেগমও চলে যান না ফেরার দেশে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
নিহত রেশমা আক্তার উত্তর বালিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার বেপারীর ছোট মেয়ে এবং উত্তর বালিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী। তবে মাসখানেক আগে পারিবারিক ভাবে সফিকুল নামে এক যুবকের সাথে রেশমার বিয়ের জন্য নাকফুল পড়ানো হয়েছিল বলে জানান তিনি।
এদিকে এ খবর পেয়ে পিরোজপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আহম্মদ মাইনুল হাসান শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনায় ইন্দুরকানী থানার এস,আই আব্বাস উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ শেষে সাংবাদিকদের জানান, মায়ের সাথে অভিমান করে বিষ পানে আত্মহত্যা করে রেশমা আক্তার। ঐ ঘটনার খবর পেয়ে মা মিনারা বেগম হার্ট এ্যাটাক করার পরে শুক্রবার সকালে তিনিও মারা যান।
Leave a Reply