রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশাল নগরীর কসই’র দোকানে বিক্রি হচ্ছে চোরাই গুরুর মাংস। তারা চোরাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে আনছে গরু। যা জবাই করে বিক্রি করা হচ্ছে প্রকাশ্যেই। এমন অভিযোগের বাস্তব প্রমান মিলেছে এই নগরীতেই।নলছিটি থেকে গরু চুরি হওয়া একটি সাড় গরু উদ্ধার করা হয়েছে নগরীর বাংলাবাজারের কসাই লাডলা শেখ এর বাড়ি থেকে। আটক করা হয়েছে তার দোকানের কর্মচারী সহ গরু চোর চক্রের চার সদস্যকে। রোববার রাতে নলছিটি থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শেখ মহিউদ্দিন এর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে চার চোর আটক ও গরু উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত চার চোরের মধ্যে দু’জনের নাম জানাগেছে। এর মধ্যে একজন নগরীর বাংলাবাজারে লাডলা শেখ এর হৃদয় মিট স্টোর্স এর কসাই ও নগরীর রিফিউজী কলোনীর বাসিন্দা মোতালেব আরিন্দার ছেলে মো. বজলু আরিন্দা ও তার সহযোগী নগরীর পোর্ট রোডের পিকআপ চালক নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা আজিজ মোল্লার ছেলে রাব্বি মোল্লা। তবে গরু চুরি সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা বাংলাবাজার হৃদয় মিট স্টোর এর মালিক লাডলা কসাই রহস্যজনক কারনে পার পেয়ে গেছে।গরুর মালিক নলছিটি উপজেলার তিমিরকাঠি এলাকার বাসিন্দা মজিবর মল্লিক জানান, গত বুধবার ৪৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি সাড় গরু ক্রয় করেন তিনি। শনিবার ওই গরুটিকে গোসল করানোর জন্য বাড়ির পার্শ্ববর্তী খালপাড়ে বেধে রাখেন। কিছুক্ষন পরে এসে দেখতে পান গরুটি উধাও হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এর আগেও গত সপ্তাহের বুধবার তার বাড়ির উঠান থেকে আরো একটি গাভী গরু একই ভাবে চুরি হয়। তাই দ্বিতীয় গরুটি চুরি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তাই ঘটনাস্থলে কাছেই একটি বাড়িতে লাগানো সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে গরু চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নলছিটি থানায় অভিযোগ করেন কৃষক মজিবর মল্লিক। ‘সিসি ক্যামেরায় তিনি দেখতে পান বজলু ও রাব্বি সহ তাদের কয়েকজন সহযোগী সাড় গরুটি জোর করে পিকআপে তুলছে। পরে গরুটিকে বেঁধে পিকআপে করে চুরি করে নিয়ে যায়।
এদিকে অভিযোগ পেয়ে নলছিটি থানার সেকেন্ড অফিসারের নেতৃত্বে অভিযান শুরু করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার দিবাগত রাতে নগরীর রিফিউজী (খালেদাবাদ) কলোনীতে বাংলাবাজারের হৃদয় মিট স্টোর্স এর মালিক লাডলা শেখ এর বাড়িতে চোরাই গরুটি খুঁজে পায় পুলিশ। শুধু তাই নয়, চোর চক্রের দুই সদস্য বজলু আরিন্দা ও রাব্বি মল্লিককে গ্রেফতার করেন। পরে তাদের দেয়া স্বীকারক্তি অনুযায়ী আরো দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে রহস্যজনক কারনে লাডলা কসাইকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।যদিও হৃদয় মিট স্টোরের মালিক লাডলা শেখ দাবী করেছেন, ‘তার দোকানের কর্মচারী বজলু আরিন্দা ও পিকআপ চালক রাব্বি মোল্লার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকায় ওই গরুটি তিনি ক্রয় করেছেন। তারা চুরি করে এনেছে কিনা সে বিষয়টি তিনি জানতেন না। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, লাডলা শেখ মাংস ব্যবসার মুল উৎস হচ্ছে চোরাই গরু। তিনি চোর চক্রের কাছ থেকে গরু কিনে দীর্ঘ দিন ধরেই এমন অবৈধভাবে ব্যবসা করে আসছে। শুধু লাডলা একাই নয়, নগরীর অধিকাংশ মাংসের দোকানেই চোরাই গরু জবাই করে তার মাংস বিক্রি হয়ে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে।
Leave a Reply