রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
এম. কে. রানা, অতিথী প্রতিবেদক:
দেশের লোকশিল্প যখন বিলুপ্তির পথে, তখন বাবুগঞ্জের রহমতপুর ইউনিয়নের আত্মপ্রত্যয়ী টাইলস তৈরির কারখানা গড়ে তুলে নিজে হয়েছেন স্বাবলম্বী। অন্যদেরও আয়ের পথ দেখিয়েছেন সংগ্রামী এই পুরুষ। অতিসাধারণ হয়েও তিনি এখন অসাধারণ। যার হাত ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাবুগঞ্জ উপজেলার ১৫টি পরিবার। কঠোর পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে দূর করেছে নিজেদের বেকারত্ম, বয়ে এনেছে সফলতা, এনেছে সংসারে স্বছলতা। নিজে স্বপ্ন দেখেছেন, অন্যকেও ভালোভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আর এর সবটুকুই সম্ভব হয়েছে দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাসে। আর এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (আইসিডিএ) নামে এই এনজিও। সামান্য কিছু পুঁজি ও সঞ্চয়ী অভিজ্ঞতা এবং ঐ এনজিও ৩ লক্ষ টাকা ঋণ সহায়তায় শুরু হয় আবদুর রহমানের পথ চলা।
দেশের অনেক লোক শিল্প যখন হারাতে বসেছে, তখন মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে বাবুগঞ্জের আবদুর রহমানের পার্কিং টাইলস কারখানা। ২০১৪ সালের দিকে বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে গড়ে তুলের বাড়ি কিংবা রাস্তার শোভা বর্ধনকারী পার্কিং টাইলসের কারখানা। ২০১৪ সালে শুরু করা ক্ষুদ্র এই কারখানাটি কালের পরিক্রমায় ভবিৎসতে বৃহৎ আকার ধারন করবে বলে প্রত্যাশা অনেকেরই। খুব অল্প সময়ে তার উৎপাদিত পাকিং টাইলস উপজেলায় যেমন কদর বেড়েছে তেমনি কদর বাড়তে শুরু করেছে জেলা শহরেও। কিন্তু সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাব ও পুঁজির অভাবে উৎপাদন কম হচ্ছে। ফলে চাহিদা পূরণে তিনি ব্যর্থ হচ্ছেন। এক সময় তিনি নিজেই এই কাজ করতেন। এখন প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন শ্রমিকদের আর কারখানা তদারকি করছেন। তাঁর কারখানায় শ্রমিকের কাজ করছে এলাকার ১৫ জন পুরুষ। তাদের প্রত্যেকে অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিদিন তৈরি হয় কমপক্ষে ৫’শত ১ হাজার বিভিন্ন ডিজাইন ও সাইজের পাকিং টাইলস। আর এই টাইলস বিক্রির টাকায় চলে ওই সব খেটে খাওয়া শ্রমিকের সংসার।
আব্দুর রহমান জানিয়েছেন সম্পূর্ণ এনালগ পদ্ধতিতে সাধারণ স্টীল প্লেটের ডাইসের মধ্যে কেমিক্যাল ও অন্যান্য উপাদান মিশ্রিত করে নিপুঁন হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে আধুনিক ও নান্দনিক ডিজাইনের পার্কিং টাইলস। তবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ও আধুনিক যন্তপাতির সংযোজন ঘটাতে পারলে প্রতিদিন ২ হাজার থেকে ৩ হাজার পিচ টাইলস উৎপাদন করতে পারবেন বলে জানান।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজিত হাওলাদার আবদুর রহমানের টাইলস কারখানা পরিদর্শন করেন এর নান্দনিকতা দেখে মুগ্ধ হন। তিনি বলেন এটা গ্রামপর্যায়ে এই প্রথম এটা সম্ভাবনাময় শিল্প তিনি এ শিল্পের জন্য সরকারী সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
Leave a Reply