রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট: ছুটির দিনে যেন বসন্ত বরণের আমেজ লেগেছে অমর একুশে বইমেলায়। শিমুল ঝরা ফাগুনের মৃদু হাওয়া দোলা দিচ্ছে পড়ন্ত বিকেলের মেলার উপচে পড়া ভিড়ে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে বইপ্রেমী মানুষের উপস্থিতি বইমেলাকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে।
শুক্রবার মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়। মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে দর্শনার্থী ও পাঠকের সংখ্যা কিছুটা কম দেখা গেছে। তবে দুপুরের পর থেকে বাড়তে থাকে মানুষের উপস্থিতি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই জনারণ্যে পরিণত হয় বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
এদিকে মেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে বইপ্রেমীদের আনাগোনা আর ঘোরাফেরায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে। কেউ বই কিনছেন, কেউ হাতে নিয়ে দেখছেন আবার কেউবা প্রিয় লেখকের বই কবে আসবে এ খোঁজ নিচ্ছেন। বরাবরের মতো অনন্যা, কাকলী, তাম্রলিপি, প্রথমা, পাঞ্জেরি প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নগুলো ছিল ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণ। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু চত্বরেও দেখা যায় শিশুদের ভিড়।
বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মীরা জানান, ছুটির দিন বিবেচনায় দর্শনার্থী ও পাঠকের চাহিদা মেটাতে প্যাভিলিয়ন ও স্টলে যথেষ্ট বই মজুদ রাখাসহ সব প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। তবে দুপুর পর্যন্ত মেলায় আসা দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। বিকেল থেকে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে।
ঘাসফুল প্রকাশনীর বিক্রেতা নাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিনের তুলনায় আজ শুক্রবার দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। বইও বিক্রি হচ্ছে বেশ ভালো। সকালে বসে বসে কাটলেও বিকেলে কাজের কোনো ফুসরত নেই।
বই মেলায় ঘুরতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালেদ আহমেদ বলেন, আমি প্রতিবছর প্রায় প্রতিদিনই মেলায় আসি। আজ ছুটির দিন আর মেলার শুরুর দিক বলে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। কিছুটা বিরক্তও লাগছে। তবে বইমেলার আমেজ ভালো লাগাও কাজ করছে।
ছুটির দিন তাই মিরপুর ১৪ থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন মোজাম্মেল হক। নিজের জন্য এখনও বই কেনা হয়নি, তবে শিশু চত্বর থেকে দুই সন্তানের জন্য বই কিনেছেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে ভিড় একটু বেশি হয়েছে মনে হয়, তবে চলতে-ফিরতে সমস্যা হচ্ছে না। প্রতিবারের মতো অতটা ধুলাবালিও নেই।
এদিকে ছটির দিনে বইমেলায় পা দিয়েই পাওয়া গেল একটা স্নিগ্ধ আবহ। আগের রাতে হালকা বৃষ্টি হয়েছিল। মাঠে তাই তেমন ধুলাবালি উড়ছে না। গত কিছুদিনের শীতের কামড়ও অনুপস্থিত।
সাধারণত একুশে বইমেলার প্রথম কয়েকটা দিন ধুলাবালি নিয়ে বিরক্ত থাকেন সংশ্লিষ্ট সবাই। আগের রাতের বৃষ্টি এ ক্ষেত্রে স্বস্তি দিলেও সন্ধ্যায় নামা ঝুম বৃষ্টি কিন্তু বিপাকেই ফেলে দর্শনার্থীসহ কমবেশি সবাইকে। ছোটাছুটি শুরু হয় দর্শকদের মধ্যে। বই সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্টলগুলোর কর্মীরা।
অন্যদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইমেলার উদ্বোধন করেন। এরপর বিকেল ৫টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের জন্য। মেলার প্রথম দিনেই ছিল বইপ্রেমী পাঠক ও লেখক-প্রকাশকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিল।
আজ শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিন। মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শিশুদের নিয়ে মেতে থাকে সিসিমপুরের আকর্ষণীয় কার্টুন চরিত্ররা।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়‘স্মরণ : মহাকবি আলাওল’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইমন জাকারিয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মিল্টন বিশ্বাস ও মোহাম্মদ শেখ সাদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. আবুল কাসেম।
Leave a Reply