শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের এক ভূমি উপ-সহকারীকে ঘুষের টাকা নেওয়ার অভিযোগে অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পাওয়া গেছে। অবশেষে ২৪ ঘন্টা পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে ওই ভূমি উপ-সহকারীকে উদ্ধার করেন ।
স্থানীয় সূত্র এবং ঘটনাস্থল থেকে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতিভাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী মো. আলাল উদ্দিন ৩ বছর ১ মাস দায়িত্ব পালন করার পর সম্প্রতি তিনি পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর উপজেলার এক ইউনিয়নে বদলি হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার বিভিন্ন লোকজনের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পরে। তাদের দাবি বিভিন্ন কাজের জন্য ভূমি উপ-সহকারী তাদের থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছেন কিন্তু কাজ করে দেননি। তাই তারা সংগঠিত হয়ে গতকাল ১ সেপ্টেম্বর সন্ধার দিকে সেই ভূমি উপ-সহকারীকে তার নিজ অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।
সারারাত এবং আজ সারাদিন তিনি সেখানেই অবরুদ্ধ থাকেন এবং শত শত পাওনাদার তার অফিসের বাহিরে অবস্থান করতে থাকে। পুলিশ পাহারায় তিনি নিজ অফিস রুমে অবস্থান করেন। পাওনাদারদের অভিযোগ তারা সরকারি ঘরের জন্য সেই নায়েবকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও তারা ঘরও পায়নি এবং তাদের দেওয়া টাকাও ফেরত পায়নি। অবশেষে সেই নায়েবের বদলির কথা শুনে তারা তাদের পাওনা টাকা ফিরিয়ে নিতে এসেছেন ।
পূর্ব আমখাওয়ার আজিজুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আমীন বলেন যে, তিনি ঘরের জন্য এই নায়েবের কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছেন কিন্তু ঘর পাননি। আমখাওয়া গ্রামের মৃত তাজুলের ছেলে মনিরুজ্জামান বলেন যে, তিনি একটি সরকারি ঘরের জন্য গেলে নায়েব তার কাছে ঘুষ দাবি করেন এবং তিনি নিরুপায় হয়ে ২৪ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছেন।
এরকম শতাধিক পাওনাদারের একটি তালিকা টাকার পরিমানসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দেন তারা। পাওনা টাকা তাদের হাতে বুঝিয়ে না দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সেই ভূমি উপ সহকারীকে সেখান থেকে যেতে দেবে না বলেও স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় অফিসের সামনে হাজার হাজার লোক অবস্থান করছিল।
তারা প্রায় শতাধিক লোক টাকা দিয়েছে বলেও দাবি করেন। অনেকে খারিজের জন্য, অনেকে অন্যান্য ভূমি সংক্রান্ত কাজে টাকা দিয়েছেন কিন্ত সেই টাকা আর ফেরত পায়নি।
তবে সেই ভূমি উপ-সহকারী মো. আলাল উদ্দীন বলেছেন যে, তিনি কোনো টাকা পয়সা কারো কাছ থেকে গ্রহণ করেননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। ঘর দেওয়ার নামে টাকা গ্রহণ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের কোনো ঘর বরাদ্ধ আসেনি কাজেই টাকা নেওয়ার প্রশ্ন আসেনা। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকেল টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ সেখানে গিয়ে ভুক্তভোগী পাওনাদারদের সাথে কথা বলেন। তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন। তারা যদি সত্যিকার অর্থেই বিভিন্ন কাজের জন্য তাকে টাকা দিয়ে থাকেন তবে সেই পাওনা টাকা ফেরত পাবেন।
অবশেষে ইউএনও’র কথায় আশ্বস্ত হয়ে পাওনাদাররা সেই ভূমি উপ-সহকারীকে তার হাতে তুলে দেন এবং আলোচনার জন্য তাদের প্রতিনিধিরা উপজেলা পরিষদে যান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, ‘আমি নিজে সেখানে গিয়েছি তাদের সাথে কথা বলেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি তারা সত্যিকার অর্থে ভূমি উপ-সহকারীবে টাকা দিয়ে থাকেন তাহলে তা ফেরত দেওয়া হবে।
Leave a Reply