কেন্দ্রীয় যুবলীগ সহ-সম্পাদক সোহাগের আমল নামায় অন্যায় লাভের পাল্লা ভারী Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




কেন্দ্রীয় যুবলীগ সহ-সম্পাদক সোহাগের আমল নামায় অন্যায় লাভের পাল্লা ভারী

কেন্দ্রীয় যুবলীগ সহ-সম্পাদক সোহাগের আমল নামায় অন্যায় লাভের পাল্লা ভারী




তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥  বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক শামিম আল সাইফুল সোহাগ’র বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের পদ পদবী ব্যবহার করে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে গত ১০ বছরে অঢেল বিত্ত বৈভবের মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন পাউবো’র উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার নিয়োগে প্রভাব বিস্তার, উচ্চ শিক্ষিত বেকার ছেলে-মেয়েদের চাকুরী দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ সহ অন্যের জমি দখল করে মাছের ঘের নির্মানের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইত্যবসরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি পতি বনে যাওয়া দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অ্যাকশন শুরু হলেও ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় হ্যালিকপ্টারে চড়ে আসা-যাওয়া করা যুবলীগ নেতা সোহাগ’র বক্তব্য, ’তিনি শঙ্কিত নন তাতে। প্রতিদিন পার্টি অফিসে বসছেন, ধানমন্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া প্রতিমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন সময়ে প্রতিমন্ত্রীর নামে স্বস্ত্রীক দুদকের মামলা হলেও তার নামে কোন মামলা হয়নি।’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১১৪, পটুয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মো: মাহবুবুর রহমান শেখ হাসিনা সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর তৎকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’র ছাত্রলীগ নেতা শামিম আল সাইফুল সোহাগ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস হিসেবে নিযুক্তি পেতে তদ্বির শুরু করেন। ওই সময়ের কেন্দ্রীয় এক ছাত্রলীগ নেতার সুপারিশে তিনি তখন প্রতিমন্ত্রীর এপিএস পদ লাভে সক্ষম হন। এর পর ক্রমশ: বদলে যেতে শুরু করে তার ব্যাংক হিসাব। কয়েক বছরের মধ্যেই ঢাকার কেরানীগঞ্জে জমির প্লট, বাড়ী, গাড়ী, বিউটি পার্লার ব্যবসা, কুয়াকাটায় রিয়েল এষ্টেট ব্যবসার পার্টনারশিপ, নিজ এলাকায় জমি জায়গা সহ মাছের ঘের করে দ্রুত ঘুরতে শুরু করে তার অর্থনীতির চাকা। একসময় পাউবো’র উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রীর কাছে ফাঁস হয়ে পড়ে তার অনিয়ম ও দূর্নীতির কর্মকান্ড। এরপর এপিএস পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তাকে। এরপর যুবলীগ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক পদ বাগাতে সক্ষম হন তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো: মাহবুবুর রহমান’র বিরুদ্ধে প্রার্থীতা ঘোষনা করে পটুয়াখালী-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। মোটরসাইকেল শো ডাউনে গনসংযোগ শুরু করেন কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী নির্বাচনী এলাকার শহর থেকে তৃনমূল জনপদে। রঙীন পোষ্টার, ফেষ্টুন, ব্যানার, লিফলেটে নিজ এলাকায় আবির্ভূত হন কোটিপতি প্রার্থী হিসেবে। দলের তৃনমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিষোদাগার শুরু করেন সাংসদ মাহবুবুর রহমান’র বিরুদ্ধে। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে এলাকা ছাড়েন শামিম আল সাইফুল সোহাগ। কিন্তু মাঝে মাঝে তিনি প্রাইভেট হ্যালিকপ্টার নিয়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসা-যাওয়া শুরু করেন রিয়েল এষ্টেট কাজ সহ জমি জায়গা-মাছের ঘেরের তদারকি কাজে। ক্ষমতাসীন দলের পদ পদবী ব্যবহার করে এভাবেই আরও সচল হতে থাকে তার ভাগ্যের চাকা। অ্যাডভোকেটশীপ লাভ করে ঢাকা বারের সদস্য হন তিনি। এরপর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসনে ফের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে দলের ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। দলের হাই কমান্ডের কাছে তদ্বির শুরু করেন দোর্দন্ড দাপটে। একসময় গনভবনে গুরু মারা শিষ্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী তাকে বলার পর গনভবন সহ নিজ এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ’গুরু মারা শিষ্য’ হিসেবে নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ে তার।

এরআগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চাকুরী প্রত্যাশীদের চাকুরী দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা শামিম আল সাইফুল সোহাগ’র বিরুদ্ধে। এসকল চাকুরী প্রত্যাশীরা চাকুরী এবং টাকা ফেরৎ না পেলেও ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউ। তবে রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের মৌডুবী এলাকার ভুক্তভোগী শাকিল মৃধা, নীলচাঁন’র নাম সহ গাজীপুর জেলার পূর্বাচল এলাকার পারাবর্তা গ্রামের রাজীব চন্দ্র ধর’র নাম অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া সাবেক রেডক্রিসেন্ট কর্মকর্তা কামাল পাশা তার চাকুরী জনিত জটিলতা নিরসনে এপিএস সোহাগকে ত্রিশ হাজার টাকা প্রদান করে। সে জটিলতা নিরসন হয় নাই এবং টাকাও ফেরত পায়নি বলে তার অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, ’সোহাগ ভাই আমার বড় বোনের ক্লাসমেট হিসেবে আমাদের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ। আমার খালাতো ভাই রাজীব চন্দ্র ধরকে কর্মসংস্থান ব্যাংকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা দিতে বলেন তিনি। আমরা তার শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক হিসাব ২০০১১২১০০০০৩৯৬৮-এ ৪ঠা এপ্রিল ২০১৫ চেকের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দেই। বাকী টাকা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার পূর্বেই জানতে পারি ওই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে, কিন্তু তিনি আমাদের জানাননি। এরপর টাকা ফেরৎ পেতে তার কাছে বহুবার যোগাযোগ করেও অদ্যবধি টাকা ফেরত পাইনি।’

এদিকে মহিপুর থানা আ’লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মো: সুলতান মিয়া জানান,’ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন সময়ে সোহাগ আমি সহ প্রায় ১৫/২০ জমি মালিকের কাছ থেকে শিববাড়িয়া নদীর উপর নির্মানাধীন শেখ রাসেল সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক আলীপুর অংশে আমাদের জমি থেকে সরিয়ে পশ্চিম পাশে করে দেয়ার জন্য ৫ লক্ষ টাকা নেয়। পরে আমাদের জমির উপর দিয়েই এ্যাপ্রোচ সড়ক করা হয়। এরপর অনেক ধর্না দিয়ে মাত্র ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ পেয়েছি, বাকী ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা অদ্যবধি তিনি আমাদের ফেরত দেননি।’
সম্প্রতি কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের আ: খালেক মিয়া’র পুত্র শামিম আল সাইফুল সোহাগের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে স্থানীয় প্রেসক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী পাঁচ পরিবারের পক্ষে ইনারা বেগম জানান, ’পাঁচটি বন্দোবস্ত কেসের মাধ্যমে সরকার তাদের সাড়ে সাত একর জমি বন্দোবস্ত দেয় এবং তারা ওই জমিতে বসবাসকরা সহ চাষাবাদ করে আসছিলেন। যার প্রকৃত মালিক তারা পাঁচটি পরিবার। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে শামিম আল সাইফুল সোহাগ তাদের জমি দখল করেন। এর প্রতিবাদ করায় ঢাকা, পটুয়াখালী ও কলাপাড়ায় তাদের নামে ১১টি মামলা করা হয় হয়রানী করার জন্য। তারা যুবলীগ নেতা সোহাগের রোষানল থেকে মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ সহ-সম্পাদক শামিম আল সাইফুল সোহাগ তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,’প্রতিদিন যুবলীগের কেন্দ্রীয় অফিসে বসি। ধানমন্ডি ৩/এ যাচ্ছি। প্রতিমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন সময়ে প্রতিমন্ত্রীর নামে স্বস্ত্রীক দুদকের মামলা হলেও আমার নামে কোন মামলা হয়নি।’

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD